জুমবাংলা ডেস্ক : করোনার কারণে বিজ্ঞাপন শিল্পের আয়ে বড় ধস নেমেছে। ব্যয় ঠিক থাকলেও বকেয়া বিল না আসায় সংকটে পড়েছে দেশের বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো। এই সংকট কাটাতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া বিল দ্রুত পরিশোধ ও ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সরকারের কাছে স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা চেয়েছে অ্যাডভারটাইজিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার দুপুরে অনলাইন জুম প্লাটফর্মে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অ্যাডভারটাইজিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি রামেন্দু মজুমদার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর, সাধারণ সম্পাদক মুনীর আহমেদ খান ও বিজ্ঞাপনী সংস্থার অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
তারা বলেন, বিজ্ঞাপনী সংস্থার মাধ্যমে গণমাধ্যমের ৮০ শতাংশ আয় হয়। অনেক মন্ত্রণালয়, সরকারি ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিল বকেয়া থাকায় বিজ্ঞাপনি এজেন্সিজ গণমাধ্যমের বিল পরিশোধ করতে পারছে না। বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও গণমাধ্যমে চলমান সংকট নিরসণে শিগগিরই বকেয়া বিল পরিশোধ করতে সরকারি নির্দেশনা দিতে হবে। বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোকে সরকার ঘোষিত প্যাকেজের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করে ২ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদান করতে হবে।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, যারা বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করে কেবল তারাই নয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও অন্যান্য সংযুক্ত খাতের লোকজন মিলে বিজ্ঞাপন শিল্পে ১৮ হাজার লোক সরাসরি জড়িত। মার্চের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আয় নেই অথচ যাবতীয় খরচাদি চলছে। এতে করে বিরাট সংকটের মধ্যে পড়েছে বিজ্ঞাপন এজেন্সিজ সদস্যরা। সদস্যের বাইরে অনেকে সংকটে রয়েছে। এই সংকট উত্তরণে সরকারের সহযোগিতা কামনা করে গত ১৩ মে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি।
বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলোর পাঁচটি দাবি হচ্ছে- ২০১৮ সাল থেকে নেওয়া অগ্রিম আয়কর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ফেরত নতুবা ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অগ্রীম আয় আদায় বন্ধ, মন্ত্রণালয়, সরকারি ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া বিল পরিশোধ, গণমাধ্যমের স্বার্থে সকল বিজ্ঞাপন দাতাকে দ্রুত বিজ্ঞাপনী সংস্থার বিল পরিশোধের নির্দেশ, ২ শতাংশ সুদে এক বছরের ব্যয়ের ৭০ শতাংশ ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ এবং বিজ্ঞাপন শিল্পকে প্রয়োজনীয় সেবা খাত হিসাবে স্বীকৃত দেওয়া।
অর্থ সহায়তায় ঋণের বিষয়ে রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘আয়ের উৎসে ধস নামায় বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোর নগদ অর্থ প্রবাহ নিয়ে হিমশিম হচ্ছে। ব্যবসা চালু রাখার জন্য বিশেষ অনুরোধ এক বছরের খরচের ৭০ শতাংশ ব্যাংক খাত থেকে চলতি মূলধনের জন্য ঋণ দিতে হবে ২ শতাংশ সুদে। সরকার অবশ্য ৯ শতাংশ সুদের কথা বলছে, যাতে ৪ শতাংশ দিবে ঋণগ্রহীতা আর সাড়ে ৪ শতাংশ দিবে। আমরা তিন বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করব। চলতি মূলধন উত্তোলনের ৬ মাস পর থেকে সুদ চালু করতে হবে।’
ব্যবসার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বিভিন্ন এজেন্সির দেওয়া তথ্যাবলী থেকে দেখা গেছে ২০২০ সালে ব্যবসার যে পরিকল্পনা ছিল তার ৭০ শতাংশ অর্জন করা যাবে না। জানুয়ারি থেকে মার্চ ব্যবসায় মন্দাভাব থাকে। দুই নববর্ষ ও বছরের শেষে দুই তিন মাস ব্যবসা বিশেষ গতি লাভ করে। নববর্ষ, ঈদুর ফিতরে ব্যবসা হয়নি। ঈদুল আযহায়ও হবে না। মার্চ থেকে স্থবির হলেও বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয় চলমান। কর্মীদের বেতনই এখন বড় ব্যয়। ক্লয়েন্ট থেকে বিলের বিপরীতে যে অর্থ পাওয়া যেত তাও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের উপর প্রচুর চাপ পড়ছে। যা সামাল দেওয়া রীতিমত কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’
সাবেক সংষ্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘কেবল আমাদের জন্যই সরকারের কাছে সহায়তা চায় না। এখন পত্রিকা ও টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন কমে গেছে। বিজ্ঞাপন শিল্পে ধস নেমেছে। এখান থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের সহায়তা প্রয়োজন। এজেন্সিগুলো বিজ্ঞাপন থেকে যে কমিশন পায় তা খুবই কম। সরকার সহায়তা না করলে অনেকে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। চাকরি থেকে কর্মী বাদ দিতে হবে। কিন্তু আমরা দীর্ঘদিনের সহকর্মীদের বাদ দিতে চায় না।’ সূত্র : কালের কন্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।