জুমবাংলা ডেস্ক : সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে কসাই জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের কলকাতার সঞ্জীবনী গার্ডেনের আলোচিত সেই ফ্ল্যাটে গেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল।
সোমবার (২৭ মে) দুপুরে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিল কলকাতা পুলিশও।
এর আগে রবিবার (২৬ মে) সকালে ডিবিপ্রধানের নেতৃত্বে কলকাতা যান ডিবির তিন সদস্যের একটি দল।
কলকাতা যাওয়ার আগে হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের তদন্ত দল কলকাতায় প্রথমে ঘটনাস্থলে যাবে। এরপর ভারতে গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
গত ২৩ মে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, এমপি আনারকে হত্যার পর খুনিরা তার দেহের মাংস হাড় থেকে আলাদা করে ফেলে। এরপর মাংসে হলুদের গুঁড়া ও মসলা মিশিয়ে ফ্রিজে রাখা হয়। পরে মাংস হিসেবে বাজারের ব্যাগে ভরে তা ট্রলিতে বাইরে নেওয়া হয়।
এখন পর্যন্ত সংসদ সদস্য আনার হত্যার ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামিরা হলো আমানুল্লাহ ওরফের শিমুল ভূঁইয়া, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজি।
গ্রেপ্তার তিন আসামির আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ২৪ মে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথির আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এমপি আনার কলকাতার সঞ্জীবনী গার্ডেনের যে ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন তার একটি সিসিটিভি ফুটেজ কালবেলার হাতে এসেছে। ফুটেজে দেখা যায়, এমপি আনার অন্য দুজনের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু জীবিত আর বের হননি।
ফুটেজ অনুযায়ী, ১৩ মে দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে সঞ্জীবনী গার্ডেনের আলোচিত সেই ফ্ল্যাটে ঢোকেন এমপি আনার। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শিমুল ভুঁইয়া ও তার সহযোগী ফয়সাল। এমপি আনার বেশ শান্তশিষ্টভাবে দরজার বাইরে র্যাকে তার জুতা রাখেন। পরে ফ্ল্যাটে ঢোকেন তিনি।
কয়েক ঘণ্টা পর বের হয়ে আসেন শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ, হাতে ছিল একটা লাগেজ। এরপর তার সঙ্গে পলিথিনের ব্যাগ হাতে বের হন আরেকজন। বের হওয়ার সময় শিমুল দরজা লক করে দেন। লিফট দিয়ে নেমে তারা বের হয়ে যান।
গোয়েন্দা সূত্রে বলা হয়, এমপি আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামানের কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে ডেকে আনা হয়। জিহাদ জানিয়েছে- আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চারজন এমপি আনারকে ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যার পর এমপি আনারের শরীর থেকে মাংস এবং হাড় আলাদা করে জিহাদ। পরে মূলত পরিচয় নষ্ট করার জন্য এমপির মাংস কিমা করে তা প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা হয়। আর হাড়গুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে নেওয়া হয়। পরে ওই ব্যাগগুলো ফ্ল্যাট থেকে বের করে নানা ধরনের যানবাহন ব্যবহার করে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে ফেলে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, জিহাদ হাওলাদার একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। তিনি খুলনার দিঘলিয়া থানায় জয়নাল হাওলাদারের ছেলে। তবে জিহাদ ভারতের মুম্বাই শহরে বসবাসের পাশাপাশি সেখানে একটি মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করতেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।