জুমবাংলা ডেস্ক : কেমিক্যাল সংকটে ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাদুকাশিল্পে। জুতা তৈরির মূল কাঁচামাল হিসেবে পিও নামে একধরনের কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয়। ডলারসংকটে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা সময়মতো কেমিক্যাল আমদানি করতে পারেননি বলে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। অটোমেশিননির্ভর কারখানায় পিও নামে কেমিক্যাল মূলত জুতার সোল্ড তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুতা বেশ কয়েকটি জেলায় পাঠানো হয়। জেলা সদরে অটোমেশিননির্ভর মোট ৩২টি কারখানা রয়েছে। ঈদের এই মৌসুমে দুই সপ্তাহ আগে থেকে ১৫টির মতো কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। তবে দুই-তিন দিন ধরে কিছু কারখানা খুলতে শুরু করেছে।
ঘাটুরার এসএ গোল্ড জুতা কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকদের বেশির ভাগই নেই। যাঁরা আছেন তাঁরা অলস সময় পার করছেন। একই এলাকার নিউ চায়না কারখানায় কাজ চললেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, যে কেমিক্যাল আছে তা দিয়ে চার-পাঁচ দিন উৎপাদন হবে।
এর মধ্যে কেমিক্যাল পাওয়া না গেলে কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। পুলিশ লাইনস এলাকার ফাইভ স্টার কারখানা কেমিক্যালের অভাবে বন্ধ রয়েছে দুই দিন ধরে।
এসএ গোল্ড জুতা কারখানার শ্রমিক মো. মোজ্জামেল হক বলেন, ‘ঈদে জুতার চাহিদা হয় বলে রমজানের আগে-পরে কাজের বেশ চাপ থাকে। কিন্তু কেমিক্যাল সংকটের কারণে কাজ না থাকায় ছুটি নিয়েছি। এখন বেকার সময় পার করছি।
কারখানাটির লাইন সুপারভাইজার ও জেলা পাদুকা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাদল মিয়া বলেন, ‘২০ দিনের মতো হলো কেমিক্যাল নেই। কারখানার প্রায় ৩০০ শ্রমিককে বসিয়ে রেখে বেতন দিতে হচ্ছে। এতে কারখানার লাখ লাখ টাকা লোকসান হবে।’
প্রায় ৩০ বছর এই পেশায় আছেন কারখানার ফিটিংসম্যান বাচ্চু সরকার। গত বছর রমজান মাসে তিনি ৪২ দিন কাজ করে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা রোজগার করেছেন। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকাও রোজগার করতে পারেননি।
‘এ প্লাস’ ফুটওয়্যারের মালিকপক্ষের হয়ে দায়িত্বরত আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘কেমিক্যাল না থাকায় কারখানা সাত দিন ধরে বন্ধ।’ এ অবস্থা থেকে উত্তরণে তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
পুলিশ লাইনসের ‘ফাইভ স্টার’ নামের কারখানার মালিক সুজন মিয়া বলেন, ‘কেমিক্যালের অভাবে আমার কারখানা গত দুই দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ কেমিক্যাল পাব সেটাও বলতে পারছি না। এ অবস্থা চলতে থাকলে জুতার চাহিদার এই মৌসুমে অন্তত ২০ লাখ টাকার লোকসান গুনতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পাদুকাশিল্প সমিতির সভাপতি হাজি মো. আমানুল্লাহ বলেন, ‘কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা আমাদের জানিয়েছেন, ডলারসংকটের কারণে সঠিক সময়ে তাঁরা এলসি খুলতে পারেননি। এ জন্য তাঁরা সময়মতো কেমিক্যাল দিতে পারেননি। ফলে ১৫টির মতোর কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বাকিগুলোও বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দেয়। দুই-তিন দিন ধরে সামান্য কেমিক্যাল আসতে শুরু করেছে। তবে ঈদের সময় ঘনিয়ে আসায় চাহিদা অনুযায়ী জুতা দেওয়া সম্ভব হবে না। এতে আমাদের লোকসান গুনতে হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।