জুমবাংলা ডেস্ক: ভুয়া আমমোক্তারনামার মাধ্যমে গুলশানে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্ধের মামলায় ৫ বছরের কারাদন্ডপ্রাপ্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন ৬ মাসের জন্য মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলম খান বাসস’কে আজ এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আসামি কুতুব উদ্দিনকে বিচারিক আদালতে দেয়া সাজার বিরুদ্ধে আনা আপিল হাইকোর্টে পেন্ডিং রয়েছে। আদালত তাকে আজ অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছেন। ভুয়া আমমোক্তারনামার মাধ্যমে গুলশানে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দের মামলায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কুতুব উদ্দিন আহমেদকে ৫ বছরের কারাদন্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত।
গত ১৫ মার্চ নিম্ন আদালতের সাজার বিরুদ্ধে কুতুব উদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। এরপর কয়েকবার তিনি আদালতে জামিন আবেদন করেন। হাইকোর্ট তাকে আজ ৬ মাসের জামিন দিয়েছেন।
আদালতে কুতুব উদ্দিনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন।
২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল ভূমি মন্ত্রণালয়ের তখনকার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করে দুদক। রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেফতার করে দুদকের উপপরিচালক মির্জা জাহিদুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল। এর আগে রাজধানীর গুলশান থানায় কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মির্জা জাহিদুল আলম।
কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও ভুয়া আমমোক্তারনামার মাধ্যমে গুলশানে ১০ কাঠার একটি প্লট তার শ্বশুরসহ কয়েকজনের নামে বরাদ্দ করেন।
শ্বশুর ও স্বজনদের নামে অভিজাত এলাকা গুলশানে সরকারি ১০ কাঠা জমি ক্রয় দেখিয়ে নিজেই বসবাস করার অভিযোগে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল গুলশান থানায় কুতুবের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলায় কুতুবের সঙ্গে নাজমুল ইসলাম সাঈদকেও আসামি করা হয়।
একই বছরের ১২ এপ্রিল কুতুবকে বরখাস্ত করে আদেশ জারি করে ভূমি মন্ত্রণালয়। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুতুব উদ্দিন গুলশানে রাজউকের অধিগ্রহণ করা সাড়ে ১৬ শতাংশ (১০ কাঠা) জমি শ্বশুর ও অন্যদের নামে ক্রয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করার বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।
১৯৬৪ সালে গুলশান-বারিধারা আবাসিক মডেল টাউন সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩১ একর ১৪ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে ওই জমি নিচু জলাশয় হওয়ায় রাজউকের জন্য অলাভজনক হবে বলে ১৯৬৯ সালে এ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
এরপর রাজউক পুনরায় ওই ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে এ নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলে। এরপর ২০০৪ সালে উচ্চ আদালতের এক রায়ে ওই ভূমির ওপর রাজউকের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে উদঘাটিত হয় যে, কুতুব উদ্দিন ভূমি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থেকে প্রভাব বিস্তার করে কৌশলে এক গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে রাজউকের সম্পত্তি অবমুক্ত করে নাজমুল ইসলাম সাইদকে জমির ভুয়া আমমোক্তার সাজিয়ে এবং শ্বশুর আব্দুল জলিল মৃধাসহ আরও দুজনকে ক্রেতা সাজিয়ে নিজেই ১০ কাঠা জমি আত্মসাৎ করেন। কুতুবের শ্বশুর আব্দুল জলিল মৃধার নামে ওই জমি ক্রয় করা হলেও তিনি কখনই এই জমি ভোগদখল বা বসবাস করেননি। শুরু থেকেই কুতুব উদ্দিন ওই জমি ভোগদখল এবং সেখানে সপরিবারে বসবাস করছিলেন। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।