রফিক সরকার, গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আগামী ২৬ নভেম্বর। আর এ সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলায় বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ।
তবে আসন্ন এ সম্মেলনে সভাপতি নয়, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে প্রাধান্য দিচ্ছেন তৃণমূল নেতাকর্মী। আর উপজেলা পর্যায়ে নেতা নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদেই হবে মূলত লড়াই। যোগ্য নেতৃত্ব আর নেতা নির্বাচনে কেউ কেউ নিরব ভূমিকা পালন করলেও অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হয়েছেন সরব। তৃণমূলে জিজ্ঞাসা কে হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক?
জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ছিলেন মো. শাহাবুদ্দিন আহমেদ। তার মৃত্যুর পর ওই কমিটির ১ম সহ-সভাপতি গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সে ক্ষেত্রে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি হতে পারেন নতুন সভাপতি।
কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল ইসলাম জানান, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি সভাপতি হলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের জন্য হবে আর্শিবাদ। কারণ ইতিমধ্যে তিনি তার নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে গুছিয়ে তুলেছেন। আর বিগত দিনে নিজ এলাকার উন্নয়নের পরেও তিনি দুই দুই বার দায়িত্ব পালন করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। সেই মন্ত্রণালয়েও তিনি হয়েছেন সফল। পাশাপাশি নিজ এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে তিনি পেয়েছেন শান্তিকন্যা খেতাব।
সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের এই পদ ঘিরে মূলত কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি ভূইয়া, যুগ্ম সম্পাদক এইচ এম আবুবকর চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে ওই দুই নামের পাশাপাশি তৃণমূলের মুখে মুখে বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশের নামও চাওর হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি ভূইয়া ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসেন। তিনি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজের ছাত্র সংসদে তিন তিনবার ভিপি নির্বাচিত হন। গত তিনবার যথাক্রমে পালন করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের একবার যুগ্ম সম্পাদক ও দুইবার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। সদস্য হিসেবে আছেন গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতেও।
মো. মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ ছাত্র জীবনেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। এ জন্য তিনি শেরে-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যথাক্রমে সাংগঠনিক সম্পাদ, সহ-সভাপতি ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে একবার প্রচার সম্পাদক ও একবার যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবেও। বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। এর আগেও তিনি ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
অন্যদিকে এইচ এম আবুবকর চৌধুরী ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এর আগে তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সস্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি বর্তমানে গাজীপুর জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবেও কাজ করছেন বিরোধী দলের মামলা-হামলা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কারাবরণ করা সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা।
জামালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান ফারুক মাস্টার জানান, সভাপতি হিসেবে আমাদের প্রথম এবং শেষ পছন্দ মেহের আফরোজ চুমকি এমপি। সম্মেলনে অতি আশা-আকাঙ্ক্ষার পদ হচ্ছে সাধারণ সম্পাদক। আমরা এ উপজেলায় এমন একজন সাধারণ সম্পাদক চাই যার রয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। যিনি তৃণমূলে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী ও মজবুত করতে সক্ষম। তবে সেই ক্ষেত্রে এইচ এম আবুবকর চৌধুরী হতে পারে সেই আশার বাতিঘর।
মোক্তারপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন জানান, সাংসদ মেহের আফরোজ চুমকির আন্তরিকতায় অতি সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে উপজেলার তুমলিয়া, নাগরী, বক্তারপুর, জাঙ্গালীয়া, জামালপুর, মোক্তারপুর, বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সেগুলোতে তৃণমুলের চাহিদানুযায়ী পেয়েছি যোগ্য নেতা এবং নেতৃত্ব। আমাদের প্রত্যাশা সাত ইউনিয়ন ও পৌরসভার মতো উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনেও আমরা পাব যোগ্য নেতৃত্ব পাবে। তবে সেক্ষেত্রে পুরাতন নয়, নতুন সম্পাদকেই আমাদের ভরসা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।