নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : গাজীপুরের কালীগঞ্জের নাগরী ইউনিয়নটি মূলত খ্রিস্টান অধ্যুসিত এলাকা। আছে মুসলিম ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসবাসও। সে হিসেবে ওই ইউনিয়নটি ধরা হয় নৌকার ভোট ব্যাংক। বিগত দিনের জাতীয় নির্বাচনের পরিসংখ্যান থেকে এটাই প্রমানিত। আসছে ২০ অক্টোবর ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন। এর আগে নাগরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন মো. কাদির মিয়া। চলতি বছরের ফেব্রæয়ারীতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে ওই ইউনিয়ন পরিষদ অভিভাবক হারান। গত মাসে নির্বাচন কমিশন নাগরী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে তফসিল ঘোষণা করেন।
নাগরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে সর্বশেষ প্রার্থী আছেন মোট ৬ জন। বর্তমান ক্ষমতাশীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অলিউল ইসলাম অলি, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন নাগরী ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি আব্দুর রহিম। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক নিয়ে এ্যাড. সিরাজ মোড়ল, আনারস প্রতীক নিয়ে মো. মুজিবুর রহমান, ঘোড়া প্রতীক নিয়ে সাখাওয়াত হোসেন মামুন ও মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে মো. মোজাম্মেল হক কাকন প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন।
উপজেলা নির্বাচান ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ফারিজা নূর জানান, ২০ অক্টোবর ৯টি স্পটে ১৪টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ হাজার ৮৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধীকার প্রয়োগ করবেন। মোট ভোটারের মধ্যে ১৫ হাজার ১৭৯ জন পুরুষ ও ১৪ হাজার ৯০৮ জন মহিলা ভোটার রয়েছেন।
সরেজমিনে ওই ইউনিয়নের উলুখোলা, নগরভেলা, সেনপাড়া, পানজোরা, নাগরী, ধনুন, মঠবাড়ী, মাল্লা, ছাতিয়ানি, ভুরুলিয়া, গলান, করান, রায়েরদিয়া, রয়েন, বির্তুল, বাগদী, গারারিয়া, পিপুলিয়া, নলছাটা, শিমুলিয়া, কাকালিয়া, রাথুরা, বড়কাউ, কেটুন এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উন্নয়নের মার্কা হিসেবে তারা নৌকাতেই তাদের আস্থা রাখছেন। এগিয়েও রাখছেন নৌকাকেই। সেই হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক মনোনীত অলিউল ইসলাম অলিই ভরসা। নির্বাচনকে ঘিরে পুরো নাগরী ইউনিয়ন এখন সরব। সতন্ত্র প্রার্থীরা সবাই মাঠেই আছেন। তারা তাদের প্রচারণাও করছেন ঠিকঠাক। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনীত প্রার্থী ধানের শীষের আব্দুর রহিম ও তার কর্মী সমর্থকদের মাঠে পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়রা বলছেন, বিএনপি শুধু নিয়ম রক্ষার স্বার্থে প্রার্থী দিয়েছেন। মূলত সাংগঠনিকভাবে বিগত দিনে তারা ওই ইউনিয়েন কোন কার্যক্রম দেখাতে পারেনি। যে কারণে নাগরী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে একবারে ঝিমিয়েই পড়েছে ধানের শীষ।
নির্বাচন ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক জানান, নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্নভাবে করতে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে ইতিমধ্যে ওই ইউনিয়নের ৩টি পয়েন্টে চেক পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় পুলিশের ৩টি মোবাইল টিম কাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শিবলী সাদিক জানান, ওইদিন পুরো জেলার মধ্যে একমাত্র নাগরী ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই জেলার সকলের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এই নির্বাচন। নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও গ্রহনযোগ্য করতে আমাদের সকল প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। নির্বাচনে কেউ যেন আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে না পারে সেজন্য ইতিমধ্যে মাঠে ভ্রাম্যমান আদালত কাজ করছে। নির্বাচনের দিন সকল কেন্দ্রে কমপক্ষে ২৭ জন করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন। প্রতিকেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ছাড়াও নির্বাচনী এলাকায় ২ প্লাটুন র্যাব ও ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি পুলিশের পেট্রোল ডিউটি জোরদার করা হবে। সব মিলিয়ে উপ-নির্বাচনকে ঘিরে ওই ইউনিয়ন থাকবে নিরাপত্তার চাঁদরে ঢাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।