আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জম্মু ও কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন না ফেরানোর ব্যাপারে নিজের অটল অবস্থানের কথা জানান দিতে বিরোধীদের কঠিন চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কী মনে করেন, এটা(কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন) ফিরিয়ে আনতে কারও উৎসাহ আছে? যদি তারা সাহস দেখায়, তাহলে তাদের রাজনৈতিক অস্বিত্ত্ব থাকবে?’
এদিকে রবিবার জম্মু ও কাশ্মীর থেকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার করার পাশাপাশি রাজ্যটিকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করেছে বিজেপি। আগামী মাসেই সেখানে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে একইদিনে প্রচারসভা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিও। নিজের প্রচারসভায় ক্ষমতায় এলে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ৩৭০ ধারা পুনর্বহাল করবেন বলে জানান তিনি। তাই প্রধানমন্ত্রীর এই চ্যালেঞ্জ সরাসরি রাহুল গান্ধির দিকে বলেই মনে করছেন অনেকে।
আগষ্টে সংসদে বিজেপি সরকার ঘোষণা করে, জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের একটি রাজ্য এবং কোনও সরকারের ক্ষমতা নেই, এর অবস্থা বদল করা বা কোনও অংশকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার। সরকারের এই অবস্থানে তীব্র বিরোধিতা করে কংগ্রেস।
রবিবার জলগাঁওয়ে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘যদি আপনাদের সাহস থাকে, তাহলে একটা পরিষ্কার অবস্থান নিন, এবং এগিয়ে চলুন”। তাঁর কথায়, “আমি বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ করছি। যদি আপনাদের উৎসাহ থাকে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ, আমাদের তুলে দেওয়া, ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা ফিরিয়ে আনবেন, তাহলে তা আপনাদের ইস্তেহার উল্লেখ করুন।’
এছাড়া কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতমাসে পাক অধিকৃত কাশ্মীর তৈরির জন্য জহওরলাল নেহেরুকে দায়ী করেন এবং বলেন, ১৯৪৮-এ “অসময়ে যুদ্ধবিরতি” ঘোষণা করার কারণেই এর সৃষ্টি হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের বিডে একটি জনসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে, জাতীয়তাবাদকে দেশজুড়ে পালন করার একটি উপলক্ষ তৈরি করে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।’
লোকসভা নির্বাচনের আগে, ফেব্রুয়ারিতে, জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা হয়। এরপর এপ্রিল-মে মাস লোকসভা নির্বাচনে জাতীয়তাবাদকে প্রচারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে বিজেপি। পুলওয়ামা হামলার পরে, পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি ঘাঁটিতে বিমান হানা চালিয়ে তাদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারত।
৫ আগষ্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বা ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে সরকার, এবং রাজ্যটিকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়। ফলে জম্মু ও কাশ্মীরে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, তারমধ্যে রয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ, রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দি করার মতো পদক্ষেপ, এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে প্রতিবাদ জানায় বিরোধীরা।
এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের “অক্ষমতা”কে বারবার তুলে ধরেছে বিজেপি, এবং নরেন্দ্র মোদি সরকারের দ্বিতীয়বারে এটিকে সরকারের অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।