আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এ যেন বিন মেঘে বজ্রপাত। ইমরান খানের সরকারকে কার্যত হতবাক করে কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে এবার কড়া ধমক দিল তালিবান। পাক সেনার ষড়যন্ত্রে জল ঢেলে বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটি সাফ জানায়, কাশ্মীর ও আফগানিস্তান সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। এই কথা মাথায় রেখে দুটি বিষয় যেন গুলিয়ে না ফেলে ইসলামাবাদ।
ভারতীয় সংবিধানের বিতর্কিত ৩৭০ ধারা লোপ হওয়ার পরই কাশ্মীর নিয়ে জুজু দেখছে পাকিস্তান। ভারত বিরোধিতায় নেমে পড়েছে ওই দেশের শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষই। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে তোপ দেগে আফগানিস্তানের সঙ্গে কাশ্মীরের তুলনা করেন ‘পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নওয়াজ’ দলের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ।
তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে এ কেমন শান্তিচুক্তি, যা নিয়ে কাবুল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে? সর্বত্র হিংসা, কাশ্মীরে রক্ত ঝরছে। এমন চুক্তি আমরা মানি না।’
কূটনীতিবিদদের মতে, কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে আফগানিস্তানে ভারতকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। পাহাড়ি দেশ থেকে মার্কিন ফৌজ সরে গেলে কাশ্মীরে তালিবানকে লেলিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় করছে পাকিস্তান।
শাহবাজ শরিফের এই মন্তব্য মোটেও ভালভাবে নেয়নি তালিবানরা। আনাদলু সংবাদসংস্থাকে দেওয়া বিবৃতিতে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ বলেন, ‘কাশ্মীরের সঙ্গে আফগানিস্তানকে গুলিয়ে ফেললে বর্তমান সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠবে। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে অন্য দেশ যেন আফগানিস্তানকে প্রতিযোগিতার ময়দান মনে না করে।’
শুধু তালিবানই নয়, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানকে তুলোধোনা করেছেন সাধারণ আফগান নাগরিকরাও।
এদিকে, পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। আফগানিস্তানের প্রভাবশালী রাজনীতিক ও পাকিস্তান বিদ্বেষী বলে পরিচিত কারজাই বৃহস্পতিবার টুইট করেছেন, ‘আফগানিস্তানকে কাশ্মীরের সঙ্গে জড়িয়ে পাকিস্তান সরকার গত তিন দিন ধরে এমন কিছু মারাত্মক মন্তব্য করছে যা প্রমাণ করছে পাকিস্তান আফগানিস্তানকে তাদের কৌশলগত ঘাঁটি বা রাজনৈতিক নীতির অঙ্গ হিসাবে মনে করছে। আমি পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিচ্ছি, আফগানিস্তান নিয়ে এরকম ভুলভাল ধারণা যেন পাকিস্তান একদম মাথায় না আনে। আফগানিস্তানে উগ্রপন্থা, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তান যেন উসকানি ও মদত না দেয়। গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় তারা যেন সন্ত্রাসবাদে মদত বন্ধ করে। পাকিস্তান জেনে রাখুক, জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের সামগ্রিক উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য ভারত সরকারের পদক্ষেপ আফগানিস্তান আন্তরিকভাবে সমর্থন করছে।’ এ খবর দিয়েছে সংবাদ প্রতিদিন।
হামিদ কারজাইয়ের পরপর টুইটগুলি দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক শত ভারতীয় রিটুইট করেছেন। অনেকেই লিখেছেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের মানুষের সঙ্গে ভারতবাসী আগেও ছিল, পরেও থাকবে। বহু মানুষের মন্তব্য, আফগানিস্তানে তালিবান ও আল-কায়দার জন্ম হয়েছে পাকিস্তানের হাত ধরেই। প্রবাসী আফগানদের বক্তব্য, কাশ্মীর ও আফগানিস্তানকে দখল করতে পাক সেনার সব অপচেষ্টা ব্যর্থ হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।