বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী কিশোরীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ফলে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সি মেয়েরা দ্বিগুণ বেশি নেতিবাচক প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই বয়সের প্রতি পাঁচটি মেয়ের শরীরের মধ্যে একজন অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের কারণে মনোযোগের ঘাটতি, ক্লান্তি, বিষণ্নতা এবং ঘুমের সমস্যার মতো স্বাস্থ্যজনিত জটিলতার সঙ্গে সংগ্রাম করছে।
Table of Contents
সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব: পরিসংখ্যানের চিত্র
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহৃত কিশোরীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার উচ্চ হার একটি উদ্বেগজনক চিত্র ফুটিয়ে তুলছে। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, নারীরা পুরুষদের তুলনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি সময় ব্যয় করছে এবং এর নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করছে। গত বছরের এক তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের মধ্যে ২০.৫% মেয়েকে নেতিবাচক প্রভাবের স্বীকার হতে হচ্ছে, যেখানে ছেলেদের মধ্যে এই হার মাত্র ৯.৮%।
একজন ১৩ বছর বয়সি মেয়ে জানায়, “সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটাতে গিয়ে কখন যে দুই ঘণ্টা পেরিয়ে যায়, টেরই পাই না। মাঝে মাঝে এটা আমার জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।”
পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব এবং মনোযোগের ঘাটতি
গবেষণা অনুযায়ী, অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে গিয়ে পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব, আত্মসম্মানবোধের ক্ষতি এবং মানসিক চাপের সৃষ্টির মতো সমস্যাগুলি সবচেয়ে উল্লিখিত হয়েছে। ১৪ থেকে ১৫ বছর বয়সি মেয়েদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাবের হার ২১% এবং ছেলেদের মধ্যে এই সংখ্যা ১০.১%।
সমাজের দায়িত্ব: সচেতনতা বৃদ্ধি করা
এমিলি ভ্যান দে ভেনটার, PHW-এর স্বাস্থ্য উন্নয়ন পরামর্শক, উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, বিশেষ করে মেয়েরা রাতে বেশি সময় ডিভাইস ব্যবহার করছে এবং অধিক পরিমাণ সাইবার বুলিয়ারের শিকার হচ্ছে। এতে তাদের বিষণ্নতা এবং আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি আসছে।
মেয়েদের জন্য বিশেষ পরামর্শ
এমিলি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন যাতে এসব সমস্যা মোকাবেলা করা যায়:
- রাতে ফোনের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা।
- সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়মিত সময় ব্যবস্থাপনা করা।
- ঘুমের আগে ফোন ব্যবহার না করা।
- ঘুমের ঘরের বাইরে ফোন রাখা।
জরিপের পরিসংখ্যান ও সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা
हालांकि, বর্তমান পরিস্থিতিতে ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে নিয়ে এই গবেষণা, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব নিয়ে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় গবেষণা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ থেকে প্রমাণিত হচ্ছে যে, কিশোরীদের মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারের ফলে একটি মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মোকাবেলা করতে হবে।
এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য, পরিবার, শিক্ষক এবং সমাজের সদস্যদের সচেতনতা এবং ভারসাম্য শেখানোর চেষ্টা করতে হবে।
মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের নীরব অন্ধকারে ডুবছে। এর ফলে কিশোরীদের মধ্যে অবনতি ঘটে যাচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে এবং উন্নত দেশগুলোর মধ্যে আরও বেশি উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
এই প্রেক্ষাপটে, এটি স্পষ্ট, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহৃত কিশোরীদের মধ্যে একটি নতুন বোঝা সৃষ্টি করছে এবং এটি সমাধানের খোঁজ করতে হবে।
এই বিষয়টি নিয়ে আপনি যদি আরও জানতে আগ্রহী হন, তবে আপনাদের জন্য CDC-এর মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা দেখতে পারেন।
প্রশ্নোত্তর
১. সোশ্যাল মিডিয়া কিভাবে কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করছে?
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ফলে কিশোরীদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধে ঘাটতি, উদ্বেগের সমস্যা, ক্লান্তি এবং ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২. মেয়েদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি কেন?
গবেষণায় দেখা গেছে, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অধিক সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করে এবং এটি নেতৃত্বের জন্য উদ্বেগজনক বিষয়।
৩. মেয়েরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে কেন?
অনেক মেয়েরা সামাজিক মিডিয়ায় সময় কাটায়, তাদের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে এবং নিজেদের ভাবনাগুলি প্রকাশ করতে।
৪. সমস্যা মোকাবেলায় কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত?
মনে রাখতে হবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারে ভারসাম্য বজায় রাখাটা প্রয়োজন। ঘুমের সময় ফোন ব্যবহার না করা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার।
৫. কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কী ধরনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে?
শিক্ষক, অভিভাবক এবং সমাজের কর্মীরা কিশোরীদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার এবং প্রযুক্তির সঠিক উপায়ে সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে কাজ করছে।
৬. যুবকদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাবগুলি কি?
যুবকরা অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ফলে মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ এবং আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির শিকার হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।