জুমবাংলা ডেস্ক : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় কিশোরী গৃহকর্মী ধর্ষণ ও সন্তান প্রসবের ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
অভিযুক্ত মো. সাখাওয়াত হোসেন প্রধান কাপাসিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার কিশোরী গৃহকর্মীর (১৬) বাবা।
বৃহস্পতিবার গাজীপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করা হয়। ঘটনা তদন্তে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
নির্যাতনের শিকার কিশোরী সম্প্রতি স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে ভিডিওতে ওই সন্তানের পিতা হিসেবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেনের নাম প্রকাশ করেন। তাকে ধর্ষণ করার ফলে বাচ্চার জন্ম হয়েছে বলে অভিযোগ করা ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যা কাপাসিয়ার এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেনের বাড়িতে ৭-৮ বছর ধরে কাজ করছেন ওই কিশোরী। কাজ করা অবস্থায় চেয়ারম্যান গৃহকর্মীকে কুপ্রস্তাব দিতেন কিন্তু গৃহকর্মী রাজি হতেন না। গত বছরের ১৫ নভেম্বর চেয়ারম্যান সাখাওয়াতের স্ত্রী বেড়াতে যাওয়ার সুযোগে রাত ১১টার দিকে গৃহকর্মীকে ধর্ষণ করেন। হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের কথা গোপন রাখার জন্য কিশোরীকে চাপ প্রয়োগ করছেন।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ইউপি চেয়ারম্যান ওই গৃহকর্মীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার পর গৃহকর্মীকে বিয়ে করার নিশ্চয়তা ও প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে গৃহকর্মী গর্ভবতী হয়ে পড়েন। গত ১২ জুন ইউপি চেয়ারম্যান ওই গৃহকর্মীকে এক হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। গত ১৬ আগস্ট ওই গৃহকর্মী কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
মামলার এজাহারে আরো বলা হয়ে, গত ২৯ আগস্ট বিকালে ইউপি চেয়ারম্যান ৩০ থেকে ৩৫ জন সন্ত্রাসী দিয়ে ওই গৃহকর্মীর ভাড়া বাড়ি থেকে ওই গৃহকর্মী ও তার পরিবারের সদস্যদের বের করে দেয়। পরে তারা গৃহকর্মী ও তার শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর পর গৃহকর্মীর বাবা জানতে পারেন, শিশুসহ ওই গৃহকর্মীকে ইউপি চেয়ারম্যানের শ্যালক আল মামুনের বাড়িতে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট ওই গৃহকর্মী সাংবাদিকদের জানান, চেয়ারম্যান নানা সময়ে সুযোগ পেলেই তাকে ধর্ষণ করতেন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান জানতে পারেন গর্ভবতী হয়ে পড়ার কথা। পরে চেয়ারম্যান কৌশলে তার বাড়ির অপর গৃহকর্মী মো. রহিত মিয়ার সঙ্গে বিয়ে দেন কিশোরীকে। বিয়ের কয়েকদিন পর স্বামী রহিত মিয়া জানতে পারে তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। পরে তিনি কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রধান জানান, তিনি ওই কিশোরীকে দীর্ষ ছয় বছর নিজের মেয়ের মতো করে লালন পালন করেছেন। তার সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্যে একটি মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি ওই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করার এবং তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি কিন্তু এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।