কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় হেইট স্পিচ ছড়ায়?

হেইট স্পিচ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ভিত্তি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে হেট স্পিচ (বিদ্বেষ ছড়াতে কারও বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য) ছড়নো হয়।  প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য সিন্ডিকেট করা, দোষারোপ করা আমাদের রাজনৈতিক চর্চার অংশ। সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যম আসার আগেই এটা ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আসার ফলে সেটি বিস্ফোরিত হয়েছে। আর গণমাধ্যম গবেষকরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো এই নেতিবাচক প্রচারণার বিপরীতে মূলধারার অনলাইন পত্রিকার দায়িত্ব সঠিক তথ্য প্রচার করা। এ জন্য দরকার পাঠকদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি।

হেইট স্পিচ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছড়ানো নানা খবর গণমাধ্যমে নানাভাবে উপস্থাপন হতে দেখা যায়, এগুলোর প্রতিবিম্ব দেখতে পাই। যখন-তখন সেটা যেন হেট স্পিচ ছড়ানোয় সহযোগী না হয়, সেটি দেখার দায়িত্ব মূলধারার গণমাধ্যমগুলো নিতে পারে। যেকোনও ভিন্নমতকে বা মত প্রকাশের স্বাধীনতার জায়গা সংকুচিত করে ফেলছি কিনা, বিবেচনায় না নিলে বিপদ বাড়বে। মূলধারার পত্রিকাগুলো নিবন্ধ, উপসম্পাদকীয়তে এবং কোনটা হেট স্পিচ, সেটা সংজ্ঞায়িত করে মানুষকে সচেতন করার কাজটা করতে পারে।

যারা সমাজে বিদ্বেষ ছড়াতে চায়, যারা সুনির্দিষ্ট আদর্শর বাইরে ভিন্নমতকে গুরুত্ব দিতে শেখে না, যারা মনে করে সমাজে তারা যেভাবে ভাবছে সেটিই সত্য এবং শেষ ভাবনা তারাই গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে সুনির্দিষ্ট কৌশল অবলম্বন করে হেট স্পিচ ছড়ায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বাইরের কিছু না, এটি সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। হেট স্পিচ সমাজে আছে বলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই।

হেট স্পিচের মূলে রয়েছে আমাদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধ এবং তার সঙ্গে মত প্রকাশের সুযোগ। আমাদের দেশে যে ধরনের হেট স্পিচের প্রচলন রয়েছে, মোটা দাগে তাদের ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। এক ধরনের হেট স্পিচ হয় রাজনৈতিক বিশ্বাস থেকে, দ্বিতীয় ধরনটি সাম্প্রদায়িক বিশ্বাস এবং তৃতীয়টি সামাজিক বিশ্বাস থেকে হয়ে থাকে, যেমন নারী অধিকারের বিরুদ্ধে হেটস্পিচ। এর যেকোনও দুইটি বা তিনটি মিলেও এ কর্মকাণ্ডকে শক্তিশালী করে তুলতে পারে।