২০১০ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর হাইতি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল। হাইতির এই দুর্যোগকে কেন্দ্র করে ওই সময় ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি হুগো শাভেজ এমন এক মন্তব্য করেছিলেন যা সবাইকে বিস্মিত করেছিল।
তিনি বলেন যে, আমেরিকা haarp নামে এমন একটি অত্যাধুনিক অস্ত্রের পরীক্ষা করেছে যে যার জন্যই হাইতিতে দুর্যোগ নেমে এসেছে। হুগো শাভেজ দাবি করেছিল যে আমেরিকার সব থেকে গোপন সাইন্স প্রজেক্টর নাম হচ্ছে haarp।
একই সময়ে পাকিস্তানে বন্যার জন্য তৎকালীন ইরানের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আহমেদিনিজাদ আমেরিকাকে দায়ী করেন। তখন বিশ্বজুড়ে haarp ষড়যন্ত্র তত্ত্বটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তৎকালীন সময়ে চিলি ও জাপানের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্যও এ থিওরিকে দায়ী করা হয়েছিল।
আসলে পৃথিবীর আয়নোস্ফিয়ারকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য haarp নামে আমেরিকায় একটি বৈজ্ঞানিক প্রজেক্টর কাজ চলছিল। এটি মানব কল্যাণমূলক প্রকল্প হলেও এ প্রজেক্ট বিশ্বজুড়ে সমালোচনার শিকার হয়েছিল।
সমালোচনার সবথেকে বড় কারণ হচ্ছে গোপনীয়তা বজায় রাখা। এ গবেষণার সব ডকুমেন্ট এবং রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি। মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ প্রজেক্টের সঙ্গে জড়িত ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে এ প্রজেক্টর মাধ্যমে 5.8 বিলিওন শক্তি উৎপাদন করা সম্ভব।
এ প্রজেক্টর বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন যে, তাদের haarp টেকনোলোজি কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম নয়। কেননা তারা আয়োনোস্ফিয়ার নিয়ে গবেষণা করেন। অথচ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি হয় ট্রোপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর উমরান ইনাম বলেন, haarp প্রজেক্ট নিয়ে মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। পদার্থবিজ্ঞান অনুযায়ী বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করা এ গবেষণার মাধ্যমে সম্ভব নয়।
আপনি অবাক হবেন যে, এ ধরনের ষড়যন্ত্র তত্ত্বের শিকার হয়েছে আরো অনেক বৈজ্ঞানিক প্রজেক্ট। নিউক্লার বোমা এবং হাইড্রোলিক ফ্র্যাকচার সিস্টেমের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে প্রাকৃতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ তৈরি করা সম্ভব বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
১৮৯৩ সালে টেসলা নামক বিজ্ঞানী ভূমিকম্প সৃষ্টি করার কৃত্রিম যন্ত্র নিয়ে গবেষণা করেন। তবে তিনি তা বাস্তবে রূপ দিতে পারেননি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।