কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক সমিতি গত ১৮ মার্চ সংবাদ সম্মেলনের মাধমে ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত সেমিস্টার পরীক্ষা ব্যতীত সকল প্রকার শ্রেণি কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন। তবে শিক্ষক সমিতির সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম দিনেই মোট আটটি বিভাগে চলেছে শ্রেণি কার্যক্রম।
১৯ মার্চ শ্রেণি কার্যক্রম বর্জনের প্রথমদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বিভাগ ঘুরে জানা যায়, ইংরেজি বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অনলাইনে ক্লাস হয়েছে। গণিত বিভাগে নেয়া হয়েছে শ্রেণী উপস্থাপনা। এছাড়া লোক প্রশাসন বিভাগ, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ফিন্যান্স ওন্ড ব্যাংকিং বিভাগে ক্লাস নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরিসংখ্যান বিভাগে ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে নৈতিক দায়িত্ব থেকে আমরা কার্যক্রম চালিয়েছি। এভাবে শ্রেণি কার্যক্রম বর্জন করলে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে, সেশনজটে পড়বে।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অমিত দত্ত ক্লাস নিয়েছেন শিক্ষক সমিতির ঘোষণা অমান্য করে। ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “শিক্ষক হিসেবে আমার কিছু নীতি-নৈতিকতা আছে। সে জায়গা থেকে আমার মনে হয়েছে ক্লাস না নিলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিক্ষক সমিতির যে দাবি দাওয়া তারা প্রশাসনের সাথে বসে সমাধান করতে পারে কিন্তু শিক্ষক হিসেবে আমার মনে হয়েছে এদিকে শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই আমার নৈতিক জায়গা থেকে আমি ক্লাস নিয়েছি।”
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষকদের যে দাবিগুলো সেগুলো আমি বিশ্বাস করি যে প্রশাসনের সাথে তারা একটি গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারে। তা না করে তাদের এই ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত কেনো এলো আমার জানা নেই। আমি আমার বিবেকবোধের জায়গা থেকে ক্লাস নিয়েছি যেনো শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর ১৯ মার্চ তারিখে পূর্ব নির্ধারিত সবগুলো সেমিস্টার পরীক্ষা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘ আজ (১৯ মার্চ) পূর্ব নির্ধারিত সকল সেমিস্টার পরীক্ষা হয়েছে। কোন বিভাগ থেকে পরীক্ষা পিছানোর জন্য আবেদন করেনি।’
এবিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, শিক্ষক সমিতির ঘোষণা অমান্য করে যে বিভাগ বা শিক্ষকেরা ক্লাস নিয়েছেন শিক্ষক সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন শিক্ষকদের শ্রেণি কার্যক্রমে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক প্ল্যান অনুযায়ী গত দুই বছরে কোন সেশন জট হয়নি। যে সকল শিক্ষকগণ এখনো শ্রেণী কার্যক্রম থেকে বাইরে রয়েছেন, তাদেরকে সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে পাঠদান কাজে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।