কামাল আতাতুর্ক মিসেল, বাসস: কুমিল্লা নগরীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পথ শিশু, শিক্ষা বঞ্চিত অসহায় ও হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে নগরীর ধর্মসাগরের পশ্চিমপাড়ে আলোকিত পাঠশালা নামে একটি স্কুল গড়ে ওঠেছে।
শাহাদাত হোসেন ইপু নামে একজন কলেজছাত্র তাদের অক্ষর শেখাচ্ছেন। ইপু ধর্মসাগর পাড়ের বাসিন্দা। নিজের অবসর সময় কাটানোর জন্য এসব শিশুদের সময় দেন। আর্থিক সহযোগিতাও করছেন সাধ্য অনুযায়ী।
জানা যায়, জন্মলগ্ন থেকে পথশিশু, যাদের বেশির ভাগেরই বাবা মা নেই, অনেকের বাবা নেই মা আছে, অনেকের মা নেই বাবা আছে, এমন ৪৭ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশু প্রতিদিন ধর্মসাগর পাড়ে বাংলা, গণিত, ইংরেজি এবং আরবী অক্ষরের সাথে পরিচিত হচ্ছে। কুমিল্লা আলোকিত পাঠশালা নামক একটি সংগঠনের ব্যানারে কয়েকজন তরুণ নিজেদের অর্থ খরচ করে এসব শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এ সংগঠনটি সেসব শিশুদের দৈনিক একবেলা আহারের প্রয়োজন মিটাচ্ছেন। পাশাপাশি তাদের জামাকাপড় থেকে শুরু করে যেকোনো অসুখে চিকিৎসা সেবাও দিচ্ছে আলোকিত পাঠশালার তরুণেরা।
অক্ষর জ্ঞান শেখানোর পাশাপাশি ৪৭ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুর নৈতিক শিক্ষাও দিচ্ছেন আলোকিত পাঠশালার তরুণেরা। কুমিল্লার বিনোদন প্রেমীদের অবসর সময় কাটানোর অন্যতম স্থান ধর্মসাগর পাড়ে এসব শিশুদের আগে টাকার জন্য পথচারীদের পা এবং জামা ধরে থাকতে দেখা যেতো হরহামেশাই। এখন সেসব শিশুদের চরিত্রের পরিবর্তন ঘটেছে। তাদের মধ্যে কেউ আর টাকার জন্য কারও পথ আটকায় না, কারও সাথে অশালীন আচরণও করে না।
আলোকিত পাঠশালার মুখপাত্র এডভোকেট মহসিন বাসসকে জানান, এসব পথশিশুরা মানুষের পথ আটকিয়ে টাকা পয়সা নিত। সে কারণে অনেক মানুষ তাদেরকে মারধর করতো। সেই থেকেই আলোকিত পাঠশালা গঠন করা হয়েছে। প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত তাদের শিক্ষাদান কার্যক্রম চলে, এরপর দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি এসব শিশুদের জামাকাপড় এবং চিকিৎসার ভারও বহন করছি আমরা। আলোকিত পাঠশালার তরুণদের উৎসাহে সেসব শিশুদের এখন পড়ালেখা শেখার পাশাপাশি ফুল এবং বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। কেউ আবার ধর্মসাগর পাড়ে বসেই ওজন মাপার মেশিনে ব্যবসা করছে। এসব পথশিশুদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু একসময় বিভিন্ন নেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আলোকিত পাঠশালার তরুণদের মমতার স্পর্শে সেসব শিশুরা এখন আর কোনো নেশাদ্রব্য গ্রহণ করে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।