রাহি রহমান, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি: বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলছে। সারা বিশ্ব আজ চিন্তিত এই ভাইরাসটি নিয়ে।
এদিকে করোনাভাইরাসটির ভয়াবহতা নিরূপণের জন্য সুখবর দিলো বাংলাদেশের নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফলিত গণিত বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহমেদ কাওছার। তার উদ্ভাবন করা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার পূর্বাভাস জানাবে।
উদ্ভাবনের ব্যাপারে আহমেদ কাওছার জুমবাংলাকে বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে আমাদের কাজ। ভাইরাসটি এতোই দ্রুত হারে বাড়ছে, ভবিষ্যতে কী হবে তা কেউ বুঝতে পারছেন না। সেই ভাবনা থেকে করোনার ভয়াবহতার সঠিক রেট বের করার পদ্ধতির কথা ভাবি। শুরু হল আমাদের গবেষণা। প্রথমে অর্ডিনারি মেশিং লার্নিংগুলোর সহায়তায় সেটি সমাধান করা যাবে বলে ভেবেছিলাম।
‘কিন্তু কাজে নামার পর বুঝলাম, যতটা সহজ মনে হচ্ছে আসলে বিষয়টি ততটা সহজ না। কারণ অর্ডিনারি মেশিং লার্নিং অ্যালগরিদমগুলোর সহায়তায় যদি সমস্যা সমাধান করি তাহলে সেটি বেশি ভবিষ্যত নির্ণয় করতে সক্ষম হবে না। এরপর গেলাম ডিপ লার্নিং-এ। ডাটার সংখ্যা অনেক কম, তাছাড়া ডিপ লার্নিং অ্যালগরিদম ও সঠিকভাবে প্রেডিকশনে সক্ষম হচ্ছে না। এরপর আমরা কিছু স্ট্যাটিস্টিক্যাল অ্যলগরিদম দিয়েও চেষ্টা করেছি। কিন্তু ব্যর্থ হলাম। তখন চিন্তা করলাম একটি নিউ অ্যালগরিদমের কথা। এরপর হয়ে গেল। কাজ প্রস্তাব করে ফেললাম। একটি নতুন নন-পেরামেট্রিক স্ট্যাটিস্টিক্যাল অ্যান্ড অনলাইন মেশিং লার্নিং অ্যগরিদম, যার নাম দিলাম লার্নিং ফর টুমোরো। এ অ্যালগরিদম নিয়ে সামনে আরও কাজ করা হবে।’
তিনি বলেন, আমাদের অ্যালগরিদমটি মূলত যে কাজটি করবে তা হচ্ছে আগামী সাত থেকে ১০ দিন পর করোনার রোগীর সংখ্যা কত হতে পারে, কয়জন মানুষ মারা যেতে পারে, আর কয়জন সুস্থ হতে পারে এগুলোর ধারণা দেবে। যাতে আমরা সবাই সাত থেকে ১০ দিন আগে থেকে সচেতন হতে পারি। আর ভবিষ্যতের জন্য করণীয় ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারি। তখন আমরা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হব।
অ্যালগরিদমটির ব্যাপারে কাওছার বলেন, প্রথমে অ্যালগরিদমটি প্রতিদিনের ডাটার উপর ভিত্তি করে লার্নিং হবে। যেমন আজকের ডাটার উপর যে লার্নিং হবে, এরপর আগের ডাটার রেটের সঙ্গে একটি সম্পর্ক করবে। তারপর একটি ফাংশন দাঁড় করাবে। যেটি এমনভাবে তৈরি হবে, যাতে ভুলটা সবচেয়ে কম হয়। তারপর সে প্রেডিকশন করবে সাত থেকে ১০ দিনের করোনার অবস্থা কি হবে। এ প্রেডিকশন আমাদের প্রস্তুতির জন্য অনেক বেশি সাহায্য করবে। ফলে আমরা করোনা মোকাবিলা করতে সক্ষম হব। আপতত আমরা সেটির দুটি ভার্সন করেছি। একটি পুরো ওয়ার্ল্ডের জন্য অন্যটি বাংলাদেশের জন্য।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে ডেটা কম। ২০ থেকে ২২টি ডেটা দিয়ে ভবিষ্যত বের করা খুবই কষ্টকর। তবুও আমরা করেছি যাতে প্রতিদিন অ্যালগরদিমটি শিখতে পারে। আর প্রোগ্রামটি সবার জন্য একটি ওয়েব সফটওয়্যার আকারে ওপেন করে দিয়েছি। যে কেউ সেখানে গিয়ে করোনা সম্পর্কে ভবিষ্যতের একটি ধারণা পাবে। আর নিজেই প্রস্তুতি নিতে পারবে।
আহমেদ কাওছার বলেন, এ উদ্ভাবনের কাজে সহযোগিতা করেছেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী এসকে ফয়সাল আহমেদ। তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।