হাসান তনা, কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী): ‘ঢাকায় থাকেন শিক্ষিকা, হাজিরা খাতায় সই হয়ে যায় নীলফামারীর স্কুলে’ শিরোনামে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জুমবাংলায় সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গঠিত তদন্ত কমিটি আজ (১৯ জুন) সকালে তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই-আলম সিদ্দিকীর হাতে জমা দিয়েছেন।
এ ঘটনার সাথে জড়িত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াৎ হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত করার সময় কেঁচো খুঁড়তে বেড়িয়ে এসেছে সাপ।
তদন্ত কমিটি সুত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে পুটিমারী ঝাকুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়। এ সময় তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষিকা শামীমা নওরিন জ্যোতি। পরে বেলা ৩টার দিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসে তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম করে।
শিক্ষা অফিসে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াৎ হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ।
তদন্ত কমিটি গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করে। আজ সোমবার (১৯ জুন) সকালে তদন্ত
কমিটির প্রধান উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্তকর্তা আবু তাহের ও অপর দুই সদস্য স্বশরীরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই-্আলম সিদ্দিকীর হাতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আবু তাহেরের কাছে প্রতিবেদন সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে পারবো না।
একটি সূত্র জানায়, প্রতি মাসে বেতন দাখিলের সময় রির্টান দাখিল করতে হয়। সেই কাগজে শামীমা নওরিন জ্যোতির
স্বাক্ষরের ঘরগুলো ফাঁকা থাকলেও বেতনের সুপারিশ করেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াত হোসেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মদ জানান, ওই শিক্ষিকাকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াত হোসেন কেন রক্ষা করতে চাচ্ছে এবং তার কি স্বার্থ রয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি।
অপর একটি সূত্র জানায়, সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন ওই ঘটনার সাথে জড়িত থেকেও তিনি নিজেই উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে কোন কিছু না জানিয়েই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছিল। যা কর্তৃপক্ষ আমলে নেয়নি বলে সুত্রটি দাবী করেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সদস্য রবিউল ইসলাম বাবু জানান, বেতন দাখিলের সময় যে কাগজপত্র দিতে হয় সে কাগজে ওই শিক্ষিকার স্বাক্ষরের ঘর ফাঁকা থাকলেও বেতন বন্ধের সুপারিশ না করে বেতন দেয়ার সুপারিশ একটি বড় অপরাধ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনটি আমি পড়েছি। অভিযুক্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াৎ হোসেনের বিরুদ্ধে আরও নতুন কিছু তথ্য এ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এছাড়াও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় ওই অফিসারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। যা সভার কার্য বিবরণীতে আসবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি শাহ্ মোঃ আবুল কালাম বারীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াৎ হোসেনের বিরুদ্ধে এর আগেও অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসৌজন্যমূলক আচারণের অভিযোগ উঠেছিল। তখন তাকে সর্তক করা হয়েছিল। তিনি একজন শিক্ষিকাকে একান্তে সময় কাটানোর শর্তে রক্ষার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে সভায় আলোচনা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।