জুমবাংলা ডেস্ক : কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে চলতি মূলধনের জোগানে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণে ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। করোনার প্রভাব মোকাবেলায় প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের সময়সীমা আরও এক মাস বাড়িয়ে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত করেছে। ওই সময়ের মধ্যে প্যাকেজের আওতায় সমুদয় ঋণ বিতরণের নির্দেশ দেয়া হয়।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) এক বৈঠকে এ নির্দেশ দেয়া হয়। গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে এ সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। করোনার কারণে এতে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এমডিদের ডাকা হয়নি। বৈঠকে ডাকা হয়েছে কেবল ১৫টি ব্যাংক ও ৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডিদের। এর আগে ২ জুলাই ২৩টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডির সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছিল।
করোনার প্রভাব মোকাবেলায় গত এপ্রিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে তহবিলের সমুদয় ঋণ বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু গত জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে মাত্র ১৩ শতাংশ। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দ্রুত ঋণ বিতরণের জন্য তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নীতিমালায়ও বড় ছাড় দেয়া হয়েছে। তারপরও করোনার এই দুরবস্থার মধ্যে ঋণ বিতরণে গতি আনতে পারেনি। বৈঠকে ঋণ বিতরণে ধীরগতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তোপের মুখে পড়েছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা।
বৈঠক সূত্র জানায়, ঋণ বিতরণের ধীরগতিতে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির। তিনি ব্যাংকগুলোকে দ্রুত ও সহজ শর্তে ঋণ বিতরণ বাড়ানোর নির্দেশ দেন। বলেন, করোনার এই সময়ে ব্যাংকগুলো তহবিলের জোগান বাড়াতে ব্যর্থ হলে দ্রুত ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না।
বৈঠকে বলা হয়, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এ তহবিল থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মাত্র ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করতে পেরেছে। যা মোট তহবিলের মাত্র ১৩ শতাংশ। ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে ২৫ শতাংশেরও কম।
এদিকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, তারা চলতি মূলধনের অভাবে ব্যবসা চালু করতে পারছেন না। করোনার কারণে ব্যবস্থা-বাণিজ্য স্থবির থাকায় অনেকেরই মূলধন আটকে গেছে। এ অবস্থায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও দ্রুত ঋণ দিচ্ছে না। ফলে করোনার প্রভাব মোকাবেলার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বৈঠকে ঋণ বিতরণের ধীরগতির কারণ জানতে চাওয়া হলে এমডিদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা ঋণ দিতে চান। কিন্তু অনেকে ঋণের জন্য আসছেন না। আসলে ঋণ নেয়ার ন্যূনতম শর্তগুলোও পরিপালন করতে পারছেন না। কোনো ধরনের জামানত দিতে পারছেন না। যে কারণে ঋণ বিতরণ কম হচ্ছে।
এছাড়া নতুন গ্রাহকদের ঋণ দিতে তারা খুব সতর্ক। কারণ করোনার এই মন্দার সময়ে ঋণ বিতরণ করলে তা আদায় হওয়া নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে ৪ শতাংশ সুদে উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়া হবে। বাকি ৫ শতাংশ সরকার থেকে ভর্তুকি দেয়া হবে। ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পুনঃঅর্থায়ন করা হবে। বাকি ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকগুলো দেবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।