আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের বেঙ্গালুরুর এক স্টার্টআপ সংস্থার কর্ণধার সূচনা শেঠকে নিয়ে দেশটিতে ব্যাপক শোরগোল চলছে। গতকাল সোমবার তার বিরুদ্ধে নিজের শিশুপুত্রকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে পুলিশ সুচনাকে গ্রেপ্তার করেছে। খবর এনডিটিভির।
এখন প্রশ্ন উঠেছে কেন সূচনা তার নিজ সন্তানকে হত্যা করলেন। এই ঘটনার তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে দেশটির পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সন্তানের দেহ ব্যাগে ভরে ট্যাক্সিতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় সোমবার কর্নাটকের চিত্রদুর্গে গ্রেপ্তার হন সূচনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১০ সালে বেঙ্কট রমন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয় সূচনার। বর্তমানে বেঙ্কট কর্মসূত্রে ইন্দোনেশিয়ায় রয়েছেন। ২০১৯ সালে সূচনা-বেঙ্কটের এক পুত্রসন্তান হয়। সন্তান জন্মানোর এক বছরের মধ্যেই ২০২০ সালে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। এরপর থেকে তাদের সম্পর্কে আরও অবনতি হতে থাকে। শেষমেশ, স্বামী-স্ত্রীর এই অশান্তি আদালতের দোরগোড়ায় পৌঁছায়।
গোয়া পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল যশপাল সিংহ ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে সূচনা এবং বেঙ্কট আদালতের দ্বারস্থ হন। তাদের বিবাহবিচ্ছেদও হয়। কিন্তু সন্তানকে মায়ের হেফাজতে রাখারই নির্দেশ দেয় আদালত। তবে শুধুমাত্র রোববারগুলোতে সন্তানের সঙ্গে বাবার দেখা করার অনুমতি দিয়েছিলেন আদালত।
পুলিশের এক সূত্রের দাবি, সূচনা সেটা নাকি চাইতেন না। ফলে তার মধ্যে সবসময় একটা উদ্বেগ কাজ করছিল। পুত্রকে দেখা করতে দিলেই যদি স্বামীর তার হেফাজতের দাবি করেন, এই ভয় তাকে ক্রমশ ঘিরে ধরেছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, পুত্রকে সূচনা নিজের হেফাজতে রাখাই নিরাপদ বলে মনে করতেন। সন্তানকে বাবার থেকে দূরে রাখতেই সূচনা তাই তাকে খুন করার পরিকল্পনা করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। তাই রোববার আসার আগেই সন্তানকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন সূচনা। সেই পরিকল্পনামাফিক সন্তানকে নিয়ে গোয়ায় যান সূচনা। সেখানে ক্যান্ডোলিমে একটি হোটেলে ওঠেন। তারপর সেখানেই খুন করেন সন্তানকে।
সোমবার ক্যান্ডোলিমের ওই হোটেল থেকে চেকআউট করেন সূচনা। হোটেল থেকেই ঠিক করে দেওয়া স্থানীয় একটি ট্যাক্সি চড়ে তিনি বেঙ্গালুরু রওনা দেন। হোটেলের কর্মীরা পরে যখন তার ফ্ল্যাটটি পরিষ্কার করতে যান, তারা দেখতে পান ফ্ল্যাটের মেঝেতে রক্তের দাগ। তাদের সন্দেহ হওয়ায় হোটেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান।
তারপরই তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ সূচনাকে ফোন করে জানতে চায়, ছেলে কোথায়? সূচনা অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে জানান, তার এক বন্ধুর বাড়িতে ছেলেকে রেখে তিনি জরুরি কাজে বেঙ্গালুরু ফিরছেন। বন্ধুর নাম, ঠিকানাও পুলিশকে দেন সূচনা। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুরোটাই ভুয়া। ওখানে ওই নামে কেউ থাকেনই না।
তারপরই ট্যাক্সিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। তার কাছ থেকে জানতে পারেন তারা কর্নাটকের চিত্রদুর্গে রয়েছেন। গোয়া পুলিশ তখন স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করে। আইমঙ্গলায় ট্যাক্সিটিকে আটকানো হয়। তল্লাশি চালিয়ে একটি ব্যাগের ভিতর থেকে শিশুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।