নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের প্রথম টাকা ও কয়েনের নকশাকার শিল্পী কে. জি. মুস্তাফা বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)।
শুক্রবার (৭ জুলাই) ভোর ৩টার দিকে রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন এবং শুভাকাঙ্খি রেখে গেছেন।
মরহুমের প্রথম নামাজে জানাযা আজ বাদ জুমা রাজধানীর পূর্ব রামপুরায় নিজ বাসভবনের নিকটস্থ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। মাদারীপুর জেলায় অবস্থিত গ্রামের বাড়িতে আজ বাদ আছর দ্বিতীয় জানাযা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিটসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ স্মারকের নকশাকারও শিল্পী কে. জি. মুস্তাফা। ১৯৬৪ সালে সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয় (বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) থেকে কমার্শিয়াল আর্ট বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছিলেন তিনি। ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশনে সিকিউরিটি ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্বাধীনতার আগেই তিনি বাংলাদেশে চলে
আসেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক তথা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত প্রথম কাগুজে নোট সমুহের নকশা করেন কে. জি. মুস্তাফা। তার মধ্যে আছে এক টাকা, পাঁচ টাকা, দশ টাকার নোট দুটি করে এবং একশত টাকার একটি নোট। তিনি এসকল নোটের মুদ্রণ তদারকির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে লন্ডন ও পূর্ব বার্লিন গিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের প্রথম কয়েন এক পয়সা থেকে পঞ্চাশ পয়সার নকশা করেন।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ বাংলাদেশ-২০১১, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্ম জয়ন্তী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতার ৯০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মুদ্রিত তিনটি রূপার স্মারক মুদ্রার নকশা করেন কে. জি. মুস্তাফা। বাংলাদেশের বিজয়ের ৪০ বছর উপলক্ষে মুদ্রিত স্মারক নোটটিরও নকশা তাঁর করা।
এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ডাক বিভাগের প্রায় ১০০টি উপরে স্মারক ডাকটিকেট নকশা করেন। করেছেন অনেক ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, কোট ফি, সংযুক্তি স্ট্যাম্প, রেভিনিউ স্ট্যাম্প, সঞ্চয় সনদপত্র, প্রাইজবন্ড, শেয়ার সার্টিফিকেট এবং নিরাপত্তা নমুনাসহ সরকারি ও বেসরকারি অনেক বন্ডের নকশা করেছেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।