আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বর্তমান সময়ে পৃথিবীজুড়ে করোনা ভাইরাসের পর যে বিষয়টি নিয়ে সবচাইতে বেশি আলোচনা হচ্ছে সেটি এন ৯৫ মাস্ক। আমরা সকলে এই মাস্কের নাম শুনলেও অনেকেই হয়তো জানি না কেন এই মাস্ক এত গুরুত্বপূর্ণ আর কিভাবে ও কারা তৈরি করে বর্তমান সময়ে মহামূল্যবান এই বস্তু।আজকেই এই মাস্কের বিস্তারিত জানব আমরা।
নামকরণের কারণটিই আগে জানা যাক। এন অক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে ‘নট রেজিস্ট্যান্ট টু ওয়েল’ বোঝাতে। কারণ এই মাস্ক শুধু বস্তুকণা ঠেকাবে, কোনো তরল নয়। সঙ্গে ‘নাইনটি ফাইভ’ জুড়ে দেওয়ার কারণ হল, এই মাস্ক বাতাসে ভাসমান ৯৫ শতাংশ কণাকেই ছাঁকতে সক্ষম।
মাস্ক ব্যবহারের ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। প্রথম শুরু হয়েছিল কিন্তু দুর্গন্ধ ঢাকতে। ১৬০০ সালের দিকে ইউরোপজুড়ে একধরনের প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে, সংক্রমিত রোগীর শরীরের দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে ডাক্তাররা তখন মাস্ক ব্যবহার শুরু করেন। সেই মাস্কের মধ্যে জুড়ে দেওয়া হতো সুগন্ধি! ১৮৭০ সালের দিকে বিজ্ঞানীরা যখন ব্যাক্টেরিয়া সম্পর্কে জানতে পারেন তখন বিলুপ্তি ঘটে সুগন্ধি মাস্কের।
তারপর নানাভাবে আগমন ঘটে সার্জিক্যাল মাস্কের। ১৯১০ সালে চীনে প্রচণ্ড গতিতে ছড়িয়ে পড়ে আরেকটি প্লেগ। ‘লিয়েন তেহ উু’ নামে দেশটির একজন চিকিৎসক গবেষণা করে জানালেন, এই প্লেগ বায়ুবাহিত। তারপর সেটি প্রতিরোধ করতে একটি কার্যকর মাস্ক বানালেন তিনি। দেখা গেল, ব্যাক্টেরিয়া প্রতিরোধের পরীক্ষায় সফলভাবে পাশ করেছে উু’র তৈরি করা মাস্ক। সেটিকেই বলা হয় বিশ্বের প্রথম আধুনিক মাস্ক।
এন-৯৫ মাস্কের সূচনা হয় থ্রি এম নামের একটি আমেরিকান কোম্পানির হাত ধরে। ১৯৬১ সালে তারা নতুন একটি সার্জিক্যাল মাস্কের উৎপাদন শুরু করে, কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের স্বীকৃতি অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর ১৯৭২ সালে এসে ওই একই কোম্পানি তৈরি করে এন-৯৫ মাস্ক। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ওই বছরেরই ২৫ মে অনুমোদন পায় এই মাস্ক।
এরপর টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার সাই ১৯৯৫ সালে এন-৯৫ মাস্কে ভাইরাস প্রতিরোধী আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করে নিজের নামে এর প্যাটেন্ট নিয়ে নেন। তাই তাকেই বলা হয় আধুনিক এন-৯৫ মাস্কের জনক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।