নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ীতে পোশাক কারখানায় চুরির অপবাদে হৃদয় (১৯) নামের এক মেকানিক্যাল মিস্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বেল্লাল হোসেন বেলালকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১ গাজীপুরের পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের সদস্যরা।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহানগরীর বাসন থানাধীন চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ধ্যায় বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন র্যাব-১ পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কমান্ডার পুলিশ সুপার কে এম এ মামুন খান চিশতী।
গ্রেপ্তার বেল্লাল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলার পাটাগ্রাম (পূর্ব বেদগাড়ী) গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে। তিনি কোনাবাড়ীর আলোচিত গ্রিনল্যান্ড গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ নিয়ে হৃদয় হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত হৃদয় টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার শুকতারবাইদ গ্রামের বাসিন্দা ও মৃত কাজীমদ্দীনের ছেলে। তিনি গ্রিনল্যান্ড গার্মেন্টসের ডাইং সেকশনে অস্থায়ীভাবে মেকানিক্যাল মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতেন এবং গাজীপুর মহানগরীর হারিনাবাড়ী (এসরারনগর হাউজিং) এলাকার একটি বাসায় মা ও বোনকে নিয়ে বসবাস করতেন।
র্যাব জানায়, গত ২৭ জুন (শুক্রবার) রাত ৮টা থেকে ২৮ জুন (শনিবার) বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে যে কোনো সময় কারখানার ভেতরে হৃদয়কে চোর সন্দেহে রশি দিয়ে বেঁধে বেল্লাল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর মরদেহ গোপনে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, যাতে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ আড়াল করা যায়।
খবর পেয়ে কোনাবাড়ী থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল করে। হৃদয়ের হত্যাকাণ্ডের পর উত্তেজিত শ্রমিকরা গাজীপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
হৃদয়ের বড় ভাই লিটন মিয়া শনিবার রাতে কোনাবাড়ী থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর র্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বেল্লালের অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালায়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেল্লাল হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোনাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহ উদ্দিন বলেন, “গ্রেপ্তার আসামি বেল্লাল বর্তমানে থানা হেফাজতে রয়েছে। বুধবার (২ জুলাই) তাকে আদালতে পাঠানো হবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।