জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আমরা কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদককে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করতে দেব না। ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনা এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ কমানোর বিষয়টি সামনে আসার পর এ মন্তব্যটি করেন উপদেষ্টা।
রবিবার (০১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, যদি আদানি গ্রুপের সঙ্গে ২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি বাতিল না হয়, তবে বিদ্যুতের দাম কমানোর জন্য দ্রুত আলোচনা শুরু করা হবে।
ফাওজুল কবির খান সাক্ষাৎকারে বলেন, চুক্তিতে কোনো অসঙ্গতি থাকলে আমরা আদানির সঙ্গে পুনরায় আলোচনা করব, তবে শুধু দুর্নীতি ও ঘুষের মতো অনিয়মের ক্ষেত্রে চুক্তি বাতিল করা হবে। তিনি আরও বলেন, আদালতের নির্দেশে যে তদন্ত চলছে, তার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০১৭ সালে শেখ হাসিনার সরকারের সময় আদানি গ্রুপের সঙ্গে ২৫ বছরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার অধীনে আদানি গ্রুপ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। এ চুক্তি নিয়ে বর্তমানে তদন্ত চলছে এবং হাইকোর্ট ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে চুক্তি পুনঃমূল্যায়নের জন্য নির্দেশ দিয়েছে।
আদালতে এক আইনজীবীর আবেদনে বলা হয়, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কয়লার মূল্য বেশি দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) গত বছর আদানি থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ১৪ টাকা ২ পয়সা দামে কিনেছে, যা ভারতের অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর তুলনায় সর্বোচ্চ দাম ছিল। এই দাম অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর বিদ্যুৎ খাতে ৩২০ বিলিয়ন টাকা (৩২ হাজার কোটি টাকা) ভর্তুকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা চাই বিদ্যুৎ খরচ কমানো হোক, শুধু আদানি থেকেই নয়, দেশের গড় খুচরা দামেরও নিচে বিদ্যুতের দাম নেমে আসুক।
এদিকে, চলতি বছরে আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ অর্ধেক করে দিয়েছে। তবে ফাওজুল কবির খান জানান, আদানি গ্রুপ সরবরাহ কমিয়ে দিলেও বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা হয়নি। আমাদের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা যথেষ্ট রয়েছে, শুধু গ্যাস সংকটের কারণে কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে।
আমরা কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদককে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করতে দেব না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট স্থানীয় উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে।
অপরদিকে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে তারা তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশকে নিরবচ্ছিন্ন, নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
এছাড়া বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে এসব সমস্যা সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত থাকবে এবং জনগণের স্বার্থে দাম কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।