বিখ্যাত বিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান যোগ দিয়েছিলেন ম্যানহাটান প্রজেক্টে। তাঁর মূল গবেষণার বিষয় ছিল, কীভাবে ইউরেনিয়াম-২৩৫ থেকে ইউরেনিয়াম-২৩৮-কে আলাদা করা যায়। ওদিকে হুইলার তখন শিকাগো চলে গেছেন। ফার্মির সঙ্গে মিলে পারমাণবিক রিঅ্যাক্টর বানানোর কাজ শুরু করেছেন। হুইলারের অনুপস্থিতিতে ফাইনম্যানের থিসিসের কাজে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন ইউজিন উইগনার। তিনি ফাইনম্যানকে বললেন থিসিস পেপারটা লিখে ফেলতে। পেপার লেখা শেষ হলে উইগনার নিজেই পেপারটা দেখে দিলেন। এর মাধ্যমে ১৯৪২ সালে রিচার্ড ফাইনম্যানের পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন হলো।
১৯৪৫ সালে পারমাণবিক বোমা প্রথমবারের মতো পরীক্ষা করে দেখার আগেই স্ত্রী আরলিন মারা যান। ফাইনম্যান আবারো নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কাজ বলতে, এ সময় তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। গবেষণা বাদ দিয়ে সেটা নিয়েই দিন কাটাতে থাকেন তিনি।
১৯৫০ সালে, ক্যালিফোর্নিয়া ইরস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা ক্যালটেকে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেলেন। সেখানেই তিনি বাকি কর্মজীবন কাটিয়েছেন। এখানে থাকতেই একবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী, অর্থাৎ ফ্রেশম্যান ও সফোমরদের পদার্থবিজ্ঞান শেখানোর দায়িত্ব নেন তিনি। ঠিক করলেন, প্রচলিত ধারার লেকচার দেবেন না।
অগ্রসর শিক্ষার্থীদের ধরে রাখার মতো করে সাজানো হলো লেকচারগুলো। অথচ শুরু থেকে যাঁরা শিখছেন, তাঁরাও অনায়াসে ঢুকে যেতে পারবেন বিষয়ের গভীরে। সেই লেকচারেরই লিখিত সংস্করণ হিসেবে পরে প্রকাশিত হয় দ্য ফাইনম্যান লেকচারস অব ফিজিকস। পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীমাত্রই জানেন এ বইয়ের গুরুত্ব।
এ সময় তিনি আবার কোয়ান্টাম বলবিদ্যা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তাঁর মূল অবদানও এই কোয়ান্টাম বলবিদ্যাতেই। আরও ঠিক করে বললে, কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডায়নামিকসে। নতুন একধরনের ডায়াগ্রামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি আমাদের। তাঁর নামে এই ডায়াগ্রামের নাম দেওয়া হয়েছে ফাইনম্যান ডায়াগ্রাম। সিস্টেম বা ব্যবস্থার সঙ্গে মিথস্ক্রিয়াশীল কণাদের আচরণ গাণিতিকভাবে ব্যাখ্যা করতে এই ডায়াগ্রাম ব্যবহার করা হয়। কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডায়নামিকসে চমৎকার অবদানের জন্য ১৯৬৫ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন রিচার্ড ফাইনম্যান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।