গ্রামীণ বাংলার মাঠে উড়ছে ধুলো, শহরের ফ্ল্যাটের বারান্দায় জমেছে উৎসুক মানুষ। কোরবানির পশুর ঘাড়ে ছুরি চালানোর মুহূর্তে সবাই ভুলে যায় পৃথিবীর যত ভেদাভেদ। কিন্তু সেই গোশত বিতরণের সময়? হঠাৎ করেই আত্মীয়তার দাবি, প্রতিবেশীর অভিমান, গরীবের অধিকার নিয়ে শুরু হয় নানান টানাপোড়েন। একটি ভুল বণ্টন কোরবানির পবিত্র তাৎপর্যকে ম্লান করে দিতে পারেকোরবানির গোশত বণ্টনের নিয়ম শুধু গাণিতিক হিসাব নয়, এটি ঈমান, ইনসাফ ও ইহসানের মূর্ত প্রতীক। এই বণ্টনে দিয়েছে স্পষ্ট, পবিত্র ও ন্যায়ভিত্তিক রূপরেখা – যা মানবিক বিভেদের ঊর্ধ্বে। এই লেখায় কোরআন-হাদিসের আলোকে, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের নির্দেশিকা ও ফকীহদের মতামতের ভিত্তিতে, জানবেন প্রতিটি স্তরের বিস্তারিত নিয়মাবলি।
কোরবানির গোশত বণ্টনের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ফিকহি ভিত্তি: কেন এত কঠোর নিয়ম?
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রকাশনা “কোরবানী: ফিকহ ও মাসায়েল” (২০২৩ হালনাগাদ সংস্করণ) এবং পবিত্র কোরআনের সূরা হজ্জের ৩৬ নং আয়াত স্পষ্ট নির্দেশ দেয়: “কোরবানির পশুর রক্ত, গোশত বা হাড় আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না; পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া।” অর্থাৎ, গোশত বণ্টন হল তাকওয়ার পরীক্ষা। হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন, “তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং (বুখারি: ৫৫৬৯)। কিন্তু এই “অন্যকে খাওয়ানো”র মধ্যে লুকিয়ে আছে গভীর দর্শন:
সঞ্চয় করো”
তিন ভাগের নীতি: হানাফি মাযহাব মোতাবেক (যা বাংলাদেশে প্রধান অনুসৃত), কোরবানিদাতা গোশত তিন ভাগে বণ্টন করবেন:
- ১ ভাগ: নিজ পরিবারের জন্য (যারা তাঁর দেখভালের দায়িত্বে আছে)।
- ১ ভাগ: আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশীদের জন্য (নির্দিষ্ট করে গরীব না হলেও)।
- ১ ভাগ: প্রকৃত গরীব, মিসকিন ও ইয়াতিমদের জন্য।
- বিঃদ্রঃ: শাফেয়ী মাযহাবে পুরোটাই নিজের জন্য রেখে দেয়া বা দান করা জায়েজ, তবে তিন ভাগে বণ্টন করাই মুস্তাহাব (প্রিয় কাজ)।
গরীবের অধিকার: অলঙ্ঘনীয়: ইসলামিক স্কলার ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ) তাঁর গবেষণাপত্র “কোরবানি: সামাজিক সমতা ও অর্থনৈতিক পুনর্বণ্টন” (২০২২)-এ উল্লেখ করেন, “কোরবানি সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণের হাতিয়ার। গরীবের ভাগ না দিলে কোরবানি শুদ্ধ হয় না – এটি ঐকমত্য্যপূর্ণ মত (ইজমা)।”
- পরিমাণ নির্ধারণে নমনীয়তা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন নির্দেশিকা মতে, কঠোর পরিমাপের বাধ্যবাধকতা নেই। স্থান, সময় ও প্রেক্ষাপট অনুযায়ী পরিবর্তন সম্ভব। একজন শহুরে কর্মজীবী হয়তো আত্মীয়-স্বজন কম পায়, তাই গরীবদের ভাগ বাড়াতে পারেন। আবার গ্রামে যেখানে দরিদ্র আত্মীয় অনেক, তাদের দিয়েই গরীবের ভাগ পূরণ হতে পারে। মূল নীতি: ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ গরীব-মিসকিনের কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।
বাস্তব জীবনে বণ্টন: যেসব ভুলে গোশত হয় ‘হারাম’
শুধু ইসলামিক নীতিমালা জানলেই চলবে না, বাস্তবে এর প্রয়োগে যেসব জটিলতা ও ভুল আমরা করি, সেগুলো চিহ্নিত করা জরুরি:
- “দেখাদেখি” বণ্টন: প্রতিবেশী বা আত্মীয় যেহেতু গরীব নন, তাই তাদের দিলে গরীবের ভাগ কমে যায়। এটি গুরুতর ভুল।
- কর্মচারী/কসাইকে গোশত দিয়ে দায়িত্ব শেষ: অনেকেই কসাই বা বাড়ির কাজের লোককে গোশত দিয়ে ভাবেন, গরীবের ভাগ পূরণ হয়ে গেছে। কিন্তু:
- যদি তাদের বেতন নগদ/অন্য উপায়ে পরিশোধ করা হয়ে থাকে, তবে এই গোশত তাদের অতিরিক্ত পারিশ্রমিক। এটি গরীবের ভাগ নয়।
- ইসলামিক ফাউন্ডেশন স্পষ্ট করে: কসাইয়ের পারিশ্রমিক আলাদা দিতে হবে। গোশত দিয়ে মেটানো যাবে না (সূত্র: ইসলামিক ফাউন্ডেশন ওয়েবসাইট, “কোরবানি সংক্রান্ত জরুরি প্রশ্নোত্তর”)।
- অভাবগ্রস্ত আত্মীয়কে উপেক্ষা: দূরের কোনো গরীব মামা বা বিধবা খালার চেয়ে পাড়ার মসজিদের মুসল্লিকে দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা। রাসূল (সা.) বলেছেন, “সেই দানই সর্বোত্তম, যা দরিদ্র আত্মীয়কে দেয়া হয়” (বুখারি)।
- গোশত বিক্রির প্রলোভন: অতিরিক্ত গোশত বা চামড়া বিক্রি করে টাকা রাখা নিষিদ্ধ। হাদিসে স্পষ্ট: “তোমাদের কেউ যেন কোরবানির গোশত বিক্রি না করে” (আবু দাউদ: ২৮১১)। বিক্রি করলে তার মূল্য দান করতে হবে।
বণ্টনের স্মার্ট টিপস (বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে):
- আগে থেকেই তালিকা তৈরি করুন: কে কে গরীব আত্মীয়/প্রতিবেশী আছেন? স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেব বা সমাজসেবী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে প্রকৃত মিসকিনদের তালিকা নিন।
- গোশতের মান নিশ্চিত করুন: বণ্টনের আগে গোশত পরিষ্কার, সুস্থ পশুর ও সঠিকভাবে জবাইকৃত কি না নিশ্চিত হোন। সন্দেহজনক গোশত দান করাও উচিত নয়।
- গোপনে দান করুন: গরীবের সম্মান রক্ষার্থে গোপনে বা অলক্ষ্যে গোশত পৌঁছে দিন। রাসূল (সা.) বলেছেন, “ডান হাত যা দান করে, বাম হাত যেন তা না জানে।”
- অবহেলিত গোষ্ঠীর কথা ভাবুন: বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, দিনমজুর কলোনি, আদিবাসী পল্লী – যারা প্রায়ই মূলধারার বণ্টনের বাইরে থেকে যায়।
কোরবানির চামড়া বণ্টন ও বিক্রির বিধান: টাকা কোথায় যাবে?
গোশত বণ্টনের পাশাপাশি চামড়ার বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এখানেই বেশিরভাগ ভুল হয়:
- নিজে ব্যবহার: চামড়া নিজের ব্যবহারের জন্য রেখে দিলে কোনো সমস্যা নেই (যেমন: ড্রাম, জায়নামাজ, জুতা)।
- দান করা: মাদ্রাসা, এতিমখানা, মসজিদ বা কোনো গরীব ব্যক্তিকে দান করা উত্তম।
- বিক্রি করা: বিক্রি করা জায়েজ, তবে শর্ত আছে:
- বিক্রয়লব্ধ সম্পূর্ণ টাকা অবশ্যই গরীব-মিসকিনদের দান করতে হবে।
- এই টাকা নিজের খরচ, কোরবানির পশুর দাম শোধ বা কসাইয়ের মজুরি দিতে ব্যবহার করা হারাম।
- ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ প্রতি বছর চামড়া বিক্রির নির্দিষ্ট মূল্য প্রকাশ করে থাকে (সর্বশেষ ২০২৪ সালের রেট অনুযায়ী)।
- সংগঠনের কাছে বিক্রি: অনেকেই মাদ্রাসা বা দাতব্য সংস্থার নামে চামড়া বিক্রি করেন। খুব সতর্ক থাকুন:
- সংস্থাটি কি বিশ্বস্ত? তারা কি প্রকৃতপক্ষে গরীবদের মধ্যে টাকা বণ্টন করে?
- বিক্রির টাকা সরাসরি গরীবদের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করুন বা সরাসরি গরীবকে চামড়া দান করুন – এটাই সর্বোত্তম।
⚠️ সতর্কবাণী: চামড়া বিক্রির টাকা দিয়ে মসজিদ নির্মাণ, মাদ্রাসার রান্নাঘর বানানো বা কোরআন শরিফ কেনাও জায়েজ নয়। এগুলো সদকা হিসেবে গণ্য হবে না। টাকা শুধুমাত্র গরীব-মিসকিনের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা বা অনুরূপ মৌলিক প্রয়োজনেই ব্যয় করতে হবে।
সাম্প্রতিক বিতর্ক ও ফতোয়া: অনলাইন অর্ডার, কোরবানি শেয়ার?
আধুনিক যুগে কোরবানির গোশত বণ্টনেও এসেছে নতুন ধারণা, যেগুলো নিয়ে ইসলামিক স্কলারদের মতামত জানা জরুরি:
- অনলাইনে কোরবানি অর্ডার ও হোম ডেলিভারি:
- জায়েজ: ইসলামিক ফাউন্ডেশন ফতোয়া (ফতোয়া নং: ২৩/২০২৩) অনুযায়ী, অনলাইনে পশু নির্বাচন, অগ্রিম পেমেন্ট করে কোরবানি করানো এবং নির্দিষ্ট ঠিকানায় গোশত ডেলিভারি নেওয়া জায়েজ, যদি:
- পশু কোরবানির সকল শর্ত (বয়স, সুস্থতা, জবাইয়ের নিয়ম) পূরণ করে।
- গোশত বণ্টনের ক্ষেত্রে ক্রেতা স্পষ্ট নির্দেশ দিতে পারেন (কতটা নিজের জন্য, কতটা আত্মীয়ের, কতটা গরীবের জন্য)।
- গরীবের ভাগ সংস্থার মাধ্যমে সঠিকভাবে বণ্টিত হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ক্রেতার।
- সতর্কতা: অতি সস্তার অফার, অস্পষ্ট প্রতিষ্ঠান বা গরীবের ভাগ বণ্টনে অস্বচ্ছতা এড়িয়ে চলুন।
- জায়েজ: ইসলামিক ফাউন্ডেশন ফতোয়া (ফতোয়া নং: ২৩/২০২৩) অনুযায়ী, অনলাইনে পশু নির্বাচন, অগ্রিম পেমেন্ট করে কোরবানি করানো এবং নির্দিষ্ট ঠিকানায় গোশত ডেলিভারি নেওয়া জায়েজ, যদি:
- “কোরবানি শেয়ার” বা অংশীদারিত্ব:
- নীতিগতভাবে জায়েজ: একটি বড় পশুতে (গরু/উট) সর্বোচ্চ ৭ জন মালিকানা নিতে পারে (হানাফি মাযহাব) এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ গোশত ভাগ পাবেন।
- বড় সমস্যা: গরীবের ভাগ নিশ্চিত করা: প্রত্যেক শেয়ারহোল্ডারকেই নিজ নিজ অংশের ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ গরীব-মিসকিনকে দিতে হবে। শুধু একজন দিলে বা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিলে অন্যদের দায়িত্ব আদৌ হয় না কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
- ফকীহদের পরামর্শ: শেয়ার কেনার সময়ই স্পষ্টভাবে গরীবের ভাগ কে, কিভাবে দেবেন তা চুক্তিতে উল্লেখ করুন বা নিজে সরাসরি বণ্টনের দায়িত্ব নিন।
কোরবানি শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি একটি সামাজিক চুক্তি। আপনার হাতের সেই গোশতের টুকরোটি যখন একজন ক্ষুধার্ত শিশুর হাসির কারণ হয়, যখন একজন বিধবা মায়ের রান্নাঘরে সুঘ্রাণ ছড়ায় – তখনই কোরবানি পূর্ণতা পায়। ইসলামের সৌন্দর্য এখানেই – ইবাদত ও মানুষের সেবার মেলবন্ধন।
জেনে রাখুন (FAQs): কোরবানির গোশত বণ্টন নিয়ে আপনার প্রশ্নের জবাব
১. কোরবানির গোশত কি আত্মীয়-স্বজনকে দেওয়া যাবে যারা গরীব নয়?
হ্যাঁ, অবশ্যই দেওয়া যাবে। ইসলামিক বিধান অনুযায়ী, গোশত তিন ভাগের এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের জন্য বরাদ্দ। এটা সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করে। তবে মনে রাখতে হবে, গরীব-মিসকিনদের জন্য নির্ধারিত এক-তৃতীয়াংশ ভাগ আলাদাভাবে দিতে হবে। গরীব আত্মীয়কে প্রাধিকার দিলে তা একসাথে দুই দায়িত্ব পূরণ করতে পারে।
২. কোরবানির গোশত নিজেরা খাওয়া কি বাধ্যতামূলক? পুরোটাই দান করা যায় কি?
না, নিজেরা খাওয়া বাধ্যতামূলক নয়, তবে মুস্তাহাব (প্রিয় কাজ)। হানাফি মাযহাবে তিন ভাগের এক ভাগ নিজ পরিবারের জন্য রাখার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু পুরো গোশত দান করাও জায়েজ। শাফেয়ী মাযহাবে পুরোটাই নিজের জন্য রাখা বা দান করা যায়। তবে রাসূল (সা.) নিজে খাওয়ার এবং অন্যকে খাওয়ানোর তাগিদ দিয়েছেন, তাই কিছু অংশ নিজেরা খাওয়া উত্তম।
৩. কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে গোশত দেওয়া যাবে কি?
না, কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে গোশত দেওয়া জায়েজ নয়। কসাইয়ের কাজের জন্য নগদ টাকা বা অন্য কোনো পণ্য পারিশ্রমিক দিতে হবে। তাকে গোশত দেওয়া হলে সেটা অতিরিক্ত উপহার বা দান হিসেবে গণ্য হবে, যা গরীবের জন্য নির্ধারিত ভাগ থেকে আলাদা। গরীবের ভাগ পূর্ণ করার জন্য আলাদা গোশত দিতে হবে।
৪. কোরবানির চামড়া বিক্রি করে টাকা মসজিদে দান করা যায় কি?
না, কোরবানির চামড়া বিক্রি করে প্রাপ্ত টাকা মসজিদ, মাদ্রাসা, রাস্তা-ঘাট নির্মাণ বা কোরআন কেনায় ব্যয় করা জায়েজ নয়। এই টাকা শুধুমাত্র গরীব-মিসকিনদের দান করতে হবে, বিশেষত তাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান বা চিকিৎসার প্রয়োজন মেটানোর জন্য। অন্য কোনো খাতে ব্যয় করলে তা সদকা হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না।
৫. অনলাইনে কোরবানি দিলে গরীবের ভাগ কিভাবে নিশ্চিত করব?
অনলাইন সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে গরীবের ভাগ বণ্টনের জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা দিতে হবে এবং তাদের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠানটি কাদের কাছে, কতটা পরিমাণ গোশত গরীবদের মধ্যে বিতরণ করে তার রিপোর্ট বা প্রমাণ চাইতে পারেন। বিকল্পভাবে, নিজের তত্ত্বাবধানে গরীবের ভাগের গোশত আলাদাভাবে দান করার ব্যবস্থা করতে পারেন। অস্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান এড়িয়ে চলুন।
৬. একাধিক পশু কোরবানি করলে গরীবের ভাগ আলাদা করে দিতে হবে কি?
হ্যাঁ, প্রতিটি কোরবানির পশুর গোশত থেকেই আলাদাভাবে ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ (বা তার সমতুল্য) গরীব-মিসকিনদের দিতে হবে। একটি পশুর গোশত দিয়ে সব কোরবানির গরীবের ভাগ পূরণ করা জায়েজ নয়। প্রতিটি কোরবানি পৃথক ইবাদত, তাই প্রতিটির জন্যই পৃথকভাবে বণ্টনের নিয়ম মেনে চলতে হবে।
মনে রাখবেন, কোরবানি শুধু পশু জবাই নয়, এটি আত্মশুদ্ধি ও সামাজিক ন্যায়ের প্রশিক্ষণ। কোরবানির গোশত বণ্টনের এই নিয়মগুলো মানার মাধ্যমেই আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি সমাজে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির বীজ বপন করি। আপনার হাতের সেই মাংসের প্যাকেটটি যখন একজন অভাবগ্রস্তের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হয়, তখন তা শুধু ক্ষুধাই নিবারণ করে না, দেয় মর্যাদা, দেয় আশা। এবারের কোরবানিতে শপথ নিন – একটি টুকরো গোশতও যেন গরীবের হক থেকে বঞ্চিত না হয়। সঠিকভাবে বণ্টন করুন, পবিত্রতা রক্ষা করুন এবং কোরবানির প্রকৃত বারাকাহ লাভ করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।