স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতীয় টেস্ট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি এবং দলের অন্য কিছু খেলোয়াড় ডিন এলগার ডিআরএস নেওয়ার পরে কেপটাউন টেস্ট ম্যাচে সম্প্রচারকারীদের আক্রমণ করেছিলেন। বল ট্রাজেক্টরি স্টাম্পের উপরে চলে গিয়েছিল এবং নট আউট দেওয়া হয়েছিল। এই জন্য, অধিনায়ক বিরাট কোহলি, সহ-অধিনায়ক কেএল রাহুল এবং বোলার আর অশ্বিন সম্প্রচারকদের টার্গেট করেছিলেন এবং ম্যাচে স্টাম্পের কাছে দাঁড়িয়ে তাদের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করেছিলেন। তবে এ নিয়ে বেশ সমালোচনায় পড়েছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। নিজ দেশ থেকে বিশ্ব ক্রিকেট, সব জায়গায় হচ্ছে তার সমালোচনা।
এই প্রসঙ্গে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং বর্তমান ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার গৌতম গম্ভীর বিরাট কোহলিকে নিশানা করেছেন এবং তার অ্যাকশনকে শিশুসুলভ বলেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসের ২১তম ওভারে। ভারতীয় স্পিনার অশ্বিনের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ডিন এলগার। ভারতীয়দের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান এলগার। ডিআরএসে দেখা যায়, বল লাইন পিচ করে এলগারের হাঁটুর ছোবল দেয়। তখনও মনে হচ্ছিলো আউট। কিন্তু বল ট্র্যাকিংয়ের শেষ ধাপে দেখা যায়, বলটি চলে যেতো স্টাম্পের ওপর দিয়ে।
সাধারণত আম্পায়ার ইরাসমাসের সিদ্ধান্তের পর রিভিউ নিয়ে খুব একটা লাভ হয় না। আর এলগারের ক্ষেত্রেও সেটাই হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু প্রযুক্তির চেষ্টায় ক্ষুদ্র কিছুও তো বাদ পড়ে না। সেটাই হলো আর তখনই অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে মাথা নেড়ে ইরাসমাস বলেন, ‘এটা তো অসম্ভব।’ তার এই কথা ধরা পড়ে স্টাম্প মাইকে।
অধিনায়ক কোহলি ও ভারতের অন্যান্য ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষায়ও ফুটে ওঠে অবিশ্বাস। সেটা তারা কণ্ঠেও প্রকাশ করতে পিছপা হননি। সবগুলো কথা ধরা পড়ে সাউন্ড ক্যামেরায়। সহ-অধিনায়ক লোকেশ রাহুল বলে ওঠেন, ‘১১ জনের বিপক্ষে যেন খেলছে গোটা দেশ।’
অশ্বিন আরো কাঠগড়ায় তোলেন ব্রডকাস্টার সুপারস্পোর্টকে, ‘জয়ের জন্য অন্য কোনো ভালো পথ বের করো, সুপারস্পোর্ট!’
তবে কোহলি ছাড়িয়ে যায় সবকিছুর সীমানা। ভারতীয় অধিনায়ক স্টাম্প মাইকের কাছে মুখ নিয়েই বলেন, ‘তোমাদের দলের দিকে মনোযোগ দাও বল উজ্জ্বল করার সময়। শুধু প্রতিপক্ষের দিকে খেয়াল রাখলে চলবে না। সবসময় শুধু লোকজনকে ধরার চেষ্টা!’
কোহলির এই মন্তব্যের মূলত ইঙ্গিত দিচ্ছে ২০১৭ সালের সেই আলোচিত কেপটাউন টেস্ট। যেটিতে সুপারস্পোর্টের ক্যামেরায় ধরা পড়ে অস্ট্রেলিয়ানদের বল টেম্পারিং। যেটির সূত্র ধরে পরে নিষিদ্ধ হন স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট।
ডিআরএস নিয়ে অসন্তুষ্টি নতুন নয়। তবে ভারতীয়দের কাণ্ড এবারই প্রথম দেখলো বিশ্ব ক্রিকেট। বিশ্বব্যাপী বল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি সরবরাহ করে হক-আই নামে একটি সংস্থা, যারা স্বতন্ত্র। ক্রিকেট বিশ্বজুড়েই তাদের স্বীকৃত প্রযুক্তি চলে, এই সিরিজেও সেটাই।
ব্যাটসম্যানের হাঁটুর নিচে লাগা বল স্টাম্পের ওপর দিয়ে যেতো, এটা বিস্ময়কর বটে। তবে সাধারণ চোখে মনে হওয়া কোনো কিছু রিভিউয়ে নাটকীয়ভাবে ভুল প্রমাণিত হওয়ার অনেক নজির আছে।
ব্রডকাস্টার সুপারস্পোর্ট টুইটারে একটি গ্র্যাফিক্সে দেখায়, কেপটাউনের উইকেটের বাড়তি বাউন্সের কারণেই বলটি স্টাম্পের ওপর দিয়ে যাচ্ছিলো।
কোহলির আবগের এমন প্রকাশ মানতে পারছেন না সাবেক ভারতীয় ওপেনার গৌতম গম্ভির। স্টার স্পোর্টস-এ প্রতিক্রিয়ায় তিনি একহাত নেন কোহলিকে। তিনি বলেন, ‘কোহলি খুবই অপরিণত। ভারতীয় একজন অধিনায়ক এরকম কথা বলছেন স্টাম্প মাইকে, এর চেয়ে বাজে কিছু আর হতে পারে না। এসব কাজ করে কখনোই তরুণদের জন্য আদর্শ হতে পারবে না।’
কোহলির বিস্ফোরণ মন্তব্যের পর কড়া হুশিয়ারি দিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।