আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু নিশ্চিত করে বাকিংহাম প্যালেসের ঘোষণার পর পরই তার মুকুটে খচিত কোহিনূর হীরা ফিরে পেতে টুইটারে ঝড় তুলেছেন ভারতীয়রা।
কোহিনূরের উৎপত্তিস্থল ভারত, এমনটি দাবি করে টুইটবার্তায় তাদের অনেকে জানিয়েছেন, ঔপনিবেশিক শক্তি ব্রিটেনকে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এ হীরাটি ফিরিয়ে দিতে হবে উৎস দেশকে।
রানির মৃত্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শোকবার্তার নিচে এদের অনেকে অমূল্য এই হীরাটি চেয়ে দাবি তুলেছেন।
যুক্তরাজ্যের অন্যতম সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০৫ ক্যারেট মানের মহামূল্যবান রত্ন কোহিনূর শব্দের অর্থ ‘আলোর ঝর্ণাধারা’। কোহিনূর খচিত রানির মায়ের মুকুটটি রাখা হয়েছে টাওয়ার অফ লন্ডনে।
এই হীরার মালিকানা নিয়ে ভারতে ব্যাপক রাজনৈতিক এবং আইনি বিতর্ক রয়েছে। শুধু ভারত নয়, পাকিস্তানও এর মালিকানা দাবি করে।
সেই সময় ঔপনিবেশিক শক্তি ব্রিটেনের সঙ্গে এই রত্নের মালিকানা নিয়ে বিরোধ শুরু হয় ভারতের। ভারতীয়দের দাবি, এটি চৌদ্দ শতকের দিকে ভারতের পাওয়া গিয়েছিল। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে এটি চুরি হয়ে যায়।
এ রত্নটি প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন শাসকের হাতবদলে সর্বশেষ ব্রিটিশ রাজকীয় রত্নভান্ডারে স্থান পায়। এর আগে রাজপুট, মোগল রাজা, ইরানি যোদ্ধা, আফগানিস্তানের শাসক ও পাঞ্জাবি মহারাজার হাতবদলে ব্রিটেনের কবজায় চলে যায়।
যুক্তরাজ্যের প্রাসাদ জানিয়েছে, দক্ষিণ ভারতের গলকন্ডা খনিতে পাওয়া যায় এটি। ১৮৪৯ সালে এটি ব্রিটিশ রাজপরিবারের অধীনে আসে।
মুকুটটি রানি এলিজাবেথের জন্য ১৯৩৭ সালে তৈরি করা হয়। সেই বছর ১২ মে তার স্বামী রাজা চতুর্থ জর্জের অভিষেক অনুষ্ঠানে এটি পরেন তিনি।
রানি এলিজাবেথের মৃত্যুর পর এই মুকুট পরেন সদ্য প্রয়াত রানি ও তার মেয়ে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ১৯৫৩ সালের ২ জুন রানি হিসেবে অভিষেক অনুষ্ঠানে এ মুকুটটি পরেন তিনি।
প্লাটিনামের ফ্রেমে ২ হাজার ৮০০টি হীরা দিয়ে এই মুকুট তৈরি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত অনেকে এ হীরাটি ভারতকে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, দ্বিতীয় রানি এলিজাবেথের অধ্যায়ের অবসানের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের উচিত হবে কোহিনূরের মূল মালিক নয়াদিল্লিকে ফিরিয়ে দেয়া।
টুইটবার্তায় অনুশ্রী বলেন, ‘কোহিনূরের যাত্রা: ভারত থেকে যুক্তরাজ্যে। এটিকে নিজ দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। এটি ফিরিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার সময়কালে যেসব নিপীড়ন, নিষ্পেষণ, লুট, বর্ণবাদ, দাসত্ব হয়েছে তার দায় থেকে কিছুটা দায়মুক্ত হতে পারে রাজপরিবার।’
বিবেক সিংহ তার টুইটবার্তায় বলেন, ‘রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা গেছেন আজ। আমরা কী এখন আমাদের কোহিনূর হীরা ফিরে পেতে পারি। তারা অন্যদের সম্পদ লুট করে প্রাসাদ গড়েছেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।