২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে, যা সাধারণ জনগণের আর্থিক স্বাধীনতাকে নতুন মাত্রা দেবে। এবার থেকে ক্রেডিট কার্ড নিতে, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কিনতে এবং নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে আয়কর রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা থাকছে না। এই সিদ্ধান্তে যেমন প্রশাসনিক জটিলতা কমবে, তেমনি নতুন করদাতাদের অন্তর্ভুক্তিতেও উৎসাহ জাগবে।
ক্রেডিট কার্ড: নতুন নিয়মে কী পরিবর্তন এসেছে?
ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ বা নবায়নের ক্ষেত্রে এতদিন আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণপত্র বাধ্যতামূলক ছিল। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, টিআইএনধারীদের জন্য এখন থেকে শুধু একটি সিস্টেম-জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্রই যথেষ্ট হবে। ফলে যারা এখনও করের আওতায় পড়েননি, তারাও সহজেই ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।
Table of Contents
এই নীতির মাধ্যমে মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভোক্তাদের আর্থিক লেনদেনে স্বাচ্ছন্দ্য আসবে। বিশেষ করে যারা অনলাইন লেনদেন, আন্তর্জাতিক কেনাকাটা বা ই-কমার্সে সক্রিয়, তাদের জন্য এটি একটি ইতিবাচক পরিবর্তন।
সঞ্চয়পত্র ও ট্রেড লাইসেন্সেও শিথিলতা
একইভাবে, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রেও আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আগে এই সীমাটি কম ছিল এবং অনেকেই তা পূরণে হিমশিম খেতেন। এই সংস্কার সঞ্চয় প্রবণতাকে উৎসাহিত করবে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণের ক্ষেত্রেও এখন থেকে শুধুমাত্র টিআইএন নম্বর থাকলেই চলবে। এটি বিশেষভাবে উপকারী হবে ছোট উদ্যোক্তা এবং ফ্রিল্যান্সারদের জন্য, যাদের অধিকাংশের এখনও পূর্ণাঙ্গ কর ফাইল নেই।

যেসব ক্ষেত্রে রিটার্ন জমা এখনও বাধ্যতামূলক
যদিও কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এখনও আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা বজায় থাকবে, যেমন:
- ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণ
- আবাসিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ
- সম্পত্তি নিবন্ধন বা বিক্রয়
- বড় অঙ্কের সঞ্চয়পত্র বা মেয়াদি আমানত
এইসব খাতে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রেখে সরকার রাজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়।
কর সংস্কার: নতুন দিগন্তের সূচনা
এই কর সংস্কারকে অনেকে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের করনীতিতে নমনীয়তা আনার পাশাপাশি কর সংস্কৃতিতে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
এছাড়া, জাতীয় বাজেট বিশ্লেষকদের মতে, নতুন এই নিয়মব্যবস্থা সাধারণ নাগরিকদের কর-প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা ও আগ্রহ বাড়াবে, যা দীর্ঘমেয়াদে কর আদায় বাড়াতে সহায়তা করবে।
এই পরিবর্তনের ফলে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ এখন আরও সহজ এবং বাস্তবসম্মত। অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও আধুনিক আর্থিক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এ ধরনের সংস্কার অত্যন্ত সময়োপযোগী।
সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার পরিবর্তে নতুন প্রণোদনা: বিস্তারিত প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণ
FAQs: ক্রেডিট কার্ড ও কর রিটার্ন
- ক্রেডিট কার্ড পেতে এখন কি রিটার্ন জমা দিতে হবে?
না, এখন শুধুমাত্র টিআইএন থাকলেই সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড নেওয়া যাবে। - রিটার্ন জমা না দিয়ে কি ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া যাবে?
হ্যাঁ, নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে এখন থেকে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক নয়, কেবল টিআইএন থাকলেই চলবে। - এই নীতিমালার আওতায় কারা উপকৃত হবেন?
নতুন উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ যাদের এখনো পূর্ণ কর ফাইল নেই, তারা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। - এই নিয়ম কবে থেকে কার্যকর হবে?
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট কার্যকর হওয়ার পর থেকেই এই নিয়ম কার্যকর হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। - রিটার্ন জমা ছাড়াই সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে কি?
হ্যাঁ, তবে সীমাবদ্ধতা রয়েছে—১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কিনতে রিটার্ন জমা লাগবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।