খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) র্যাগিং, মারামারি, মাদকসেবনসহ বিভিন্ন শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ১৯ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার ও জরিমানা করেছে প্রশাসন। এসব অপরাধের গুরুত্বর ভিত্তিতে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার এবং আর্থিক জরিমানার মতো শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের ২৭তম সভায় গত ৯ অক্টোবর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত।
ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের দপ্তর থেকে প্রকাশিত অফিস আদেশে বলা হয়, শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী বাকিদের সাময়িক বহিষ্কার ও আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।
আদেশ অনুযায়ী, গত ২ মে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষকের ওপর আঘাতের অভিযোগে বাংলা ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. মোবারক হোসেন নোমানকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার, সনদ বাতিল ও ক্যাম্পাসে আজীবন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে তিনি নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাওয়ায় মানবিক বিবেচনায় তার সনদ বাতিলের সিদ্ধান্তটি শর্তসাপেক্ষে স্থগিত করা হয়েছে।
এ ছাড়া মাদক সেবন, ক্রয় ও বিক্রয়ের অভিযোগে অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাসান হাওলাদার এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, খুবিতে সুস্থ ও নিরাপদ ক্যাম্পাস পরিবেশ বজায় রাখতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় থাকবে।
ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনায় আইন ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. জাহিদুল ইসলামকে স্থায়ী বহিষ্কারের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। একই অভিযোগে আইন ডিসিপ্লিনের মেহেরাফ হোসেন রাব্বী, আমিনুল এহসানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আচরণ শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ পরিপন্থি কোনো কাজে জড়িত না হওয়ার শর্তে অভিভাবকসহ মুচলেকা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের মো. রাসেল শেখকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও একই ডিসিপ্লিনের তনয় রায়কে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
র্যাগিংয়ে সম্পৃক্ততার দায়ে গণিত ডিসিপ্লিনের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কেএম রাউফুল আলম অর্নবকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার ও একই ডিসিপ্লিনের মো. রিমন মিয়া, আহসান হাবীব এবং মো. সালমান হোসেনকে ৫,০০০ টাকা করে জরিমানা ও অভিভাবকসহ মুচলেকা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনায় শিক্ষা ডিসিপ্লিনের মো. উমর ফারুক, সাদমান উদ দৌলাকে বর্তমান টার্মের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার এবং ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের মনিরুজ্জামান রিয়াদ ও শিক্ষা ডিসিপ্লিনের জিয়াদ আল সামসকে ৫,০০০ টাকা করে জরিমানা ও অভিভাবকসহ মুচলেকা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, গালাগাল ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে গণিত ডিসিপ্লিনের আরও তিন শিক্ষার্থী বাবুল আক্তার দুর্জয়, রাশেদ খান মেনন এবং বাঁধন রায়কে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।