গণতন্ত্রবিরোধী পরাজিত শক্তির পুনরুত্থান রোধে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ‘স্বৈরাচার পতন দিবস’ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি এই আহবান জানান। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ফেরানোর সংগ্রাম এখনো চলমান।
তারেক রহমান বলেন, ৬ ডিসেম্বর জাতীয় ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন, ১৯৯০ সালের যেদিন দীর্ঘ রক্তাক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী এরশাদ শাসনের অবসান ঘটে।
তিনি আরো বলেন, ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এরশাদ অসাংবিধানিক শাসন জারি করেন, যা ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত, যে গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্বৈরশাসক এরশাদ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেন। এই পরিস্থিতিতে ৯ বছর আপসহীন আন্দোলন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নেতৃত্ব দেন বেগম খালেদা জিয়া, যার ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে স্বৈরাচার পতন ঘটায়।
তারেক রহমান আরো উল্লেখ করেন, ১৯৯০-এর সেই গণ-আন্দোলনের চেতনা থেকেই ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তরুণরা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করেছে।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের ভয়ংকর শত্রু। শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অবসানের পর এখন গণতন্ত্রের পূর্ণ পুনরুজ্জীবন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় নিরলস সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর দোয়া কামনা করে তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার আমলে ‘গণতন্ত্রের মা’ খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুম ও নানামাত্রিক নিপীড়ন চালানো হয়েছে, যার ফলে তাঁর জীবন এখন সংকটাপন্ন অবস্থায়। একই সঙ্গে লাখ লাখ জাতীয়তাবাদী নেতাকর্মীর ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের কথাও তিনি তুলে ধরেন।
তারেক রহমান ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
এ ছাড়া স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রবিরোধী পরাজিত শক্তির পুনরুত্থান রোধে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
এদিকে ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণীতে আশির দশকের ছাত্র গণ-আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বরের স্বৈরাচার পতন দেশের গণতন্ত্র যাত্রার নতুন সূচনা ছিল। কিন্তু গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি কখনোই নিষ্ক্রিয় ছিল না; বরং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলিত হয়ে ক্রমাগত গণতন্ত্রকে দুর্বল করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার যৌথভাবে দেশকে একদলীয় দুঃশাসনের এক অনতি ক্রান্তি বৃত্তের মধ্যে ঠেলে দেয়। নাগরিক অধিকার ও বহুদলীয় গণতন্ত্র বারবার বাধাগ্রস্ত হলেও দেশের মানুষ প্রতিবারই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে আবারও গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশ যেন আর কখনো গুম, গুপ্তহত্যা ও ক্রসফায়ারের নিষ্ঠুর পরিকাঠামোতে না পড়ে, রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় গণতন্ত্রকামী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। স্বৈরাচার পতন দিবসে এটাই হোক আমাদের দৃপ্ত শপথ।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



