আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে গেলে সময় লাগবে ১৫ বছর। প্রতিদিন যদি ১০০ টিরও বেশি লরি এই ধ্বংসস্তূপ-আবর্জনা সরানোর কাজে ব্যবহৃত হয়, তার পরও এই সময় লাগবে। এ কাজে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জাতিসংঘের এক আনুমানিক হিসাবের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থা ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম গত জুন মাসে এবিষয়ক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদন মূলত গাজাকে নতুন করে গড়ে তুলতে গেলে কতটা সময় ও শ্রম ব্যয় করতে হবে তারই ওপর আলোকপাত করেছে।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমি প্রয়োজন পড়বে।
এর আগে, গত মে মাসে জাতিসংঘের আরেক সংস্থা ইউএন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম জানিয়েছিল, সবচেয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে গেলেও গাজা পুনর্গঠনে ২০৪০ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। এবং এই পুনর্গঠনে ব্যয় হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসন গাজার এতটাই ক্ষতি করেছে যে, অঞ্চলটির স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সম্পদ খাতে ৪০ বছরের অর্জন স্রেফ ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে।
গাজায় অবস্থিত জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা গত সপ্তাহে গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘অবকাঠামোর যে ক্ষতি করা হয়েছে, তা স্রেফ উন্মাদনার পর্যায়ে পড়ে…দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই, যেটাতে ইসরায়েলি হামলার আঁচ লাগেনি।’ তিনি বলেন, ‘প্রকৃত অর্থেই এই অঞ্চলে ভৌগোলিক চিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যেখানে আগে পাহাড় ছিল না, এখন সেখানে পাহাড় হয়ে গেছে। (ইসরায়েলের) ২ হাজার পাউন্ডের বোমাগুলো আক্ষরিক অর্থেই এই অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছে।’
ধ্বংসস্তূপগুলো অবিস্ফোরিত অস্ত্রে (বোমায়) পূর্ণ হয়ে আছে, যার ফলে প্রতি সপ্তাহে ১০টিরও বেশি বিস্ফোরণ ঘটছে এবং এর ফলে আরও বেশি মৃত্যু হচ্ছে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ হারিয়ে মানুষ অচল হয়ে পড়ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।