জুমবাংলা ডেস্ক : গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার আশা আখতার আঁখি এক বছর আগে হারপিক খেয়ে তার খাদ্যনালী পুড়িয়ে ফেলে। এরপর এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটোছুটি করে শেষে সে জেলার শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব স্মৃতি কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনীর নামে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালের চিকিৎসকগণ অস্ত্রপচারের মাধ্যমে তার খাদ্যনালী পরিবর্তন করে দেন। বর্তমানে আঁখি তার শ্বশুরবাড়িতে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে।
আঁখির বাবা মো. আফাজউদ্দিন বাসসকে বলেন, আঁখিকে সুস্থ ও স্বাভাবিক দেখে প্রতিবেশী এবং আত্মীয়-স্বজন অবাক হয়ে যায়। কারণ, তারা কেউই ভাবেনি যে আঁখি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। আমরা তাকে অন্য হাসপাতালে ভর্তি করাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই বিশেষায়িত হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাজীব হাসান আমাদের আশ্বস্ত করেন যে এই বিশেষায়িত হাসপাতালে আঁখির সুচিকিৎসার ব্যবস্থা আছে।
হাসপাতালের চিকৎসা বিভাগের পরিচালক ডা. রাজীব হাসান এবং ডা. জে এম এইচ কাউসার আলম সফলভাবে আঁখির অস্ত্রপচার সম্পন্ন করেন।
হাসপাতালটিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে আফাজ উদ্দিন বলেন, এই হাসপাতালের সেবাই কেবল সুন্দর নয়, এখানকার চিকিৎসকগণও খুবই যতœবান ও ¯েœহশীল।
আঁখির পরিবারের তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের সামর্থ না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পেশ করলে তিনি আঁখির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।
আঁখির বাবা এই আর্থিক সহায়তা জন্য খুবই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী অতি হৃদয়বান। তিনি আমাদের এলাকায় এমন একটি আধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং তিনি গরীবদের জন্য আর্থিক সহায়তা দেন। আমি আন্তরিকভাবে দোয়া করছি যে আল্লাহ যেন বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যাকে দীর্ঘজীবী করেন।
আঁখির মতো আরো অসংখ্য মানুষকে সেবা দিয়ে গাজীপুর এবং এর আশেপাশের এলাকার মানুষের কাছে আশার আলো ছড়িয়েছে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ২৫০ শয্যার বিশ্বমানের এই হাসপাতাল।
হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত ও বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসের সহকারী ম্যানেজার আবুল হাসান বাসসকে বলেন, প্রতিদিন আমরা গাজীপুর, সাভার, ঢাকা, মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে অনেক রোগী পাচ্ছি।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালের প্রযুক্তিগত সেবা পরিচালনায় রয়েছে মালয়েশিয়ার বিখ্যাত বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা কুমপুলান পেরুবেটান জোহর (কেপিজে) হেলথ কেয়ার বারহাড। কেপিজে হেলথ কেয়ার বারহাডের বর্তমানে মালয়েশিয়ার ২৬টি হাসপাতাল রয়েছে এবং ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও থাইল্যান্ডেও সংস্থাটি কাজ করছে।
এই সেবা (দ্য ফ্যাসিলিটি) বাংলাদেশে প্রথম ইন্টেগ্রিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইএমসএস) সার্টিফাইড হসপিটাল এন্ড নার্সিং কলেজে পরিণত হয়েছে। যা রোগীদের আরো আস্থার সাথে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে।
আবুল হাসান বলেন, আধুনিক সফটওয়্যার ও ডাটাবেজের মাধ্যমে আমরা প্রত্যেক রোগীর তথ্য সংরক্ষণ করি। এরফলে কোন রোগী দ্বিতীয়বার এলে তার চিকিৎসা তথ্য আমরা সহজে পেয়ে যাই।
তিনি বলেন, এই হাসপাতাল দেশে প্রথম আইএমএস সার্টিফায়িড হাসপাতালের স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় অবদানের জন্য ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন সংস্থা ব্যুরো ভারিতাসের স্বীকৃতিও লাভ করেছে।
আবুল হাসান বলেন, এখানে প্রথমবার ১শ’ টাকা দিয়ে একজন রোগী নাম রেজিস্ট্রি করতে পারে। প্রতিবার আরো ৬শ’ টাকা দিয়ে আউটডোর সেবা নেয়া যায়। সাধারণ বেড প্রতিরাত ৮শ’ টাকা এবং ভিভিআইপি ক্যাবিনের ব্যয় ৪ হাজার টাকা। রোগীদের প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহের ব্যবস্থাও এখানে রয়েছে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেসার দুঃস্থদের সেবা, মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে অবিস্মরণীয় ভূমিকা এবং নিজেকে পর্দার আড়ালে রেখে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণাদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৩ সালে এই মহিয়সী নারীর নামে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
ডা. রাজীব বলেন, হাসপাতালটির প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন হচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহেনা এই ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য।
রাজীব বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে আমাদের অনেক প্রেরণা ও উৎসাহ জুগিয়েছেন। তিনি আমাদের এ নির্দেশও দিয়েছেন যে, কোন রোগী যেন বিনা চিকিৎসায় হাসপাতাল ত্যাগ না করে। প্রত্যেক রোগী যেন হাসপাতালে ভর্তি ও হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার সময় মাতৃসুলভ আদর-যত্ন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।