নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাযা আয়োজনকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আজ (১৫ আগস্ট) বিকাল ৪টা ১৫ মিনিটের দিকে বন্দরনগরীর আলমাস মোড় থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ পরে নগরের ওয়াসা মোড়, লালখান বাজার, কাজির দেউড়ি ও জিইসি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলাকালে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন ভয়ে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় জামায়াত-শিবিরকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ।
কোনোরকম অনুমতি ছাড়াই চট্টগ্রাম জামিয়াতুল ফালাহ্ মসজিদের মাঠে সাঈদীর গায়েবানা জানাযার ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াত নেতারা।
নগর পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেটা প্রতিরোধ করেছি। পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। জামায়াত শিবিরের কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। তাদের আরও কোনো নাশকতার পরিকল্পনা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জাতীয় দৈনিক সমকালের অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার আসরের নামাজের পরে নগরের জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে সাঈদীর গায়েবানা জানাজা আদায়ের ঘোষণা দেয় জামায়াত ইসলামী। দুপুর থেকে নগরের ওয়াসা, কাজির দেউড়ি, আলমাস মোড়ে জড়ো হতে থাকেন জামায়াত ইসলামী ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। তবে আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। পূর্ব অনুমতি না নেওয়ায় জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের মাঠে প্রবেশে বাধা দেয় পুলিশ।
জামায়াত-শিবির কর্মীদের একাংশ আলমাস মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। স্লোগান দিতে দিতে যানবাহন চলাচলে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা সবদিক ছড়িয়ে পড়ে। তাদের একটি অংশ কাজির দেউড়ি মোড়ে অবস্থান নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশও তাদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। অন্যদিকে আলমাস মোড় থেকে ধাওয়া খেয়ে ওয়াসা মোড়ে জড়ো হওয়া জামায়াত-শিবিরকর্মীদের সঙ্গেও পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। ধাওয়া দিয়ে জিইসি পর্যন্ত নিয়ে যায়। এ সময় জামায়াত শিবির কর্মীরা সটকে পড়েন।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবির বলেন, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সহিংসতার জন্য জড়ো হয়েছিল। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের একাধিক সদস্য আহত হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে সাঈদীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর চট্টগ্রাম জেলা ও বন্দর নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।