জুমবাংলা ডেস্ক : টায়ারের কালো রং থাকার কারণ, এতে থাকে কার্বন ব্ল্যাক। সহজলভ্য এই রাসায়নিক উপাদান রাবারের মাঝে টায়ারের উপযোগী বৈশিষ্ট্য গঠনে ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক রাবারের রং ধূসর সাদাটে, এমনকি প্রক্রিয়াকরণের পরও রাবার রং সাদাই থাকে। প্রক্রিয়াকরণ বলতে ভলকানাইজিং বোঝাচ্ছি। এটি রাবার প্রক্রিয়াকরণের একটি অন্যতম ধাপ।
সমস্যা হলো রাবার খুবই নমনীয়, ক্ষয়প্রবণ এবং তাপের প্রতি অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়াশীল। নমনীয় এবং তাপের প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ার কারণে অধিক ভারে এবং তাপমাত্রায় রাবারের বিকৃতি ঘটো উল্লেখযোগ্যভাবে।
ক্ষয়প্রবণ হওয়ার কারণে শুধু রাবারে তৈরি টায়ারের জীবনকাল হয় খুব কম, যা অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাজনক নয়। এ জন্য টায়ার তৈরির সময় রাবারের সঙ্গে উপযোগী রাসায়নিক যোগ করা হয় যা রাবারকে তাপ সহনশীলতা বৃদ্ধি করে ভার বহনক্ষম করে এবং ক্ষয়রোধী করে জীবনকাল বৃদ্ধি করে। কার্বন ব্ল্যাক এ জন্য খুবই উপযোগী কিন্তু এটি রাবারের প্রাকৃতিক ধূসর সাদাটে বর্ণকে কালো করে দেয়। এ জন্যই টায়ারের রং কালো।
ইতিহাস বলছে, আগে টায়ারের রং সাদা ছিল, হঠাৎ পরিবর্তন ঘটেছে। টায়ারের সাদা রংকে আভিজাত্যের প্রতীক বলা হতো। ‘ক্লাসিক’ গাড়ির পরিচয় ছিল সাদা টায়ার, যা পরিষ্কার করার জন্য নিতেও হতো বিশেষ ব্যবস্থা।
জানা যায়, টায়ার তৈরি হয় রাবার দিয়ে, যার রং হালকা ধূসর। টায়ার মজবুত করতে এর সঙ্গে আগে মেশানো হতো জিংক অক্সাইড। যার কারণে টায়ার হয়ে যেত সাদা। কিন্তু এখনো জিংক অক্সাইড মেশানো হয়।
টায়ারের রং পরিবর্তনের বিষয়টি সর্বপ্রথম দেখেন সাংবাদিক ডেভিড ট্রেসি। তিনি ফোর্ড গাড়ির একটি মডেলে দেখেন কালো টায়ার। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো ১৯১৭ সাল থেকে টায়ারে কার্বন ব্লাক ব্যবহার শুরু করেন।
তিনি জানান, গ্যাস বা তেলের অসম্পূর্ণ জ্বলনের ফলে সৃষ্টি হয় কার্বন ব্ল্যাক। এটি টায়ারকে ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ফলে অতিরিক্ত গরমে ও টায়ার ফেটে যায় না। কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহারে টায়ারের কর্মক্ষমতাও বাড়ে। সংস্থাগুলোর দাবি, আগে যেসব টায়ারে কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহার করা হতো না সেগুলো পাঁচ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ভালোভাবে চলত। কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহার শুরু করার পর টায়ারগুলো প্রায় ৫০ হাজার কিলোমিটার চলে।
মূল কথা হচ্ছে, কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহারের পেছনে অন্য আরেকটি কারণও রয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বুলেট তৈরিতে প্রচুর পরিমাণে জিংক অক্সাইড দরকার ছিল তাই টায়ার প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো জিংক অক্সাইডের পরিবর্তে কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহার শুরু করতে বাধ্য হয়ে।
এরপর থেকে টায়ারে কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহার শুরু হয়। তবে এখনো কার্বন ব্ল্যাক ব্যবহারের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ জিংক অক্সাইড ও ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশ কার্বন ব্ল্যাকই টায়ার প্রস্তুত করতে ব্যবহৃত হয়। ফলে টায়ারের রং কালো হয়ে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।