জুমবাংলা ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া পড়ালেখার পাশাপাশি ‘দ্য ডেইলি সান’ নামে জাতীয় দৈনিকের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসাবেও কাজ করেন। সাংবাদিকতা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জের ধরে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিভিন্ন কারণে সেই ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়টি আবারও নতুন করে আলোচনার শীর্ষে উঠে এসেছে। সাময়িক বহিষ্কৃত ওই ছাত্রী মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তার নিজের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
এদিকে একই ইস্যুতে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আরেক সাংবাদিক দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শামস জেবিনকে মারধর করেছে সন্ত্রাসীরা।
এর আগে ঢাকায় সোমবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাদের ২৪ ঘন্টার সময় বেধে দেয় ‘মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ’। একই সাথে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরও ৩৪ জন শিক্ষার্থী বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বহিষ্কারের ব্যাপারে তিনি অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি তার সাংবাদিকতা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জের ধরে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এর আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কি হওয়া উচিত?’ কেন এমন স্ট্যাটাস তিনি দিলেন জানতে চেয়ে উপাচার্য তার অফিস কক্ষে ডাকেন। অতপর তার সঙ্গে অশালীন শব্দ ব্যবহার করে গালাগালি দেন বলে অভিযোগ জিনিয়ার। উপাচার্যের দেয়া গালাগালি দেয়া ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল।
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড খোন্দকার নাসিরউদ্দিন অভিযোগ করেন, ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া আরেক ছাত্রের যোগসাজশে ‘উপাচার্য, প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসের মহাপরিকল্পনা ‘করছিল এমন প্রামাণ প্রশাসন পেয়েছে। এ কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সাময়িক বহিষ্কারের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, অনলাইন প্রোটাল ও গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, সংবাদ পরিবেশন করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন।
মঙ্গলবার ( ১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় উপাচার্যের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলন উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়ার বহিস্কার ফেসবুক স্টাটাসের জন্য দেয়া হয়নি বরং ফাতেমা তুজ জিনিয়া অন্যায়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষিকাদের নিয়ে অশালীন কুরুচিপূর্ণ এবং কুৎসা রটনাসহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ফেসবুক, ই-মেইল আইডি হ্যাক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট হ্যাক করে ভর্তি পরীক্ষা বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এছাড়া ফাতেমা তুজ জিনিয়া সিনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে।
এদিকে বহিষ্কারাদেশে লেখা ছিলো, প্রশাসনকে নিয়ে তার দেয়া স্ট্যাটাস এবং কমেন্টসমূহে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেয় করার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে।
এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন অভিযোগ করেছেন, ইতিমধ্যে ওই ছাত্রী তার ফেসবুক আইডি দু’বার হ্যাক করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে মিথ্যাচার ও অশালীন মন্তব্য করেছে। অথচ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের কোন টাকা এখনও খরচ হয় নি। সে সরকার বিরোধী সংগঠনের নেতা ও বিভিন্ন বিতর্কিত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ রেখে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের অপমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা একজন শিক্ষার্থী হিসাবে অন্যায়, গর্হিত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
উপাচার্যের বক্তব্য, ওই ছাত্রী যদি তার অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে তবে তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়া হবে। এদিকে জিনিয়া বলেন, আমি যেখানে অপরাধ করিনি, সেখানে কেন ক্ষমা চাইবো।
এদিকে মঙ্গলবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করে। একই সঙ্গে বহিষ্কারাদেশ তুলে না নিলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণাও দেন তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।