লাইফস্টাইল ডেস্ক : মুখের ত্বককে সতেজ এবং সঠিক অবস্থায় রাখতে আমাদের নিজের পরিচর্যা করা অত্যন্ত জরুরি। ত্বকের পরিচর্যার জন্য বিভিন্ন প্রকার পণ্য ব্যবহার করা হয়, তবে অনেক সময় সেগুলোতে রাসায়নিক উপাদান এবং কৃত্রিম সংকেত আমাদের ত্বকে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই, যদি আপনি চান একটু সতেজ এবং নিরাপদ ঘরোয়া উপায়ের দিকে নজর দিতে, তাহলে আপনাকে ঘরোয়া টোনার তৈরির বিষয়ে কথা বলতে হবে। ঘরোয়া টোনার তৈরির উপায়: সহজ প্রকাশের কৌশল আপনাকে সেই প্রস্তুত প্রণালী শেখাবে যা আপনার ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করবে। এই টোনার তৈরি করা খুব সহজ এবং এটি আপনার ত্বকের প্রশান্তি আনতে সাহায্য করবে।
Table of Contents
টোনার হলো সেই পণ্য যা ত্বককে পরিষ্কার করতে এবং পরবর্তীতে যত্ন নিতে সাহায্য করে। এটি আপনার ত্বকের পোরগুলোকে আরও গভীরভাবে পরিষ্কার করে এবং ত্বকের অম্ল-বেসের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের উচ্ছলতা এবং সতেজতা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক। সাধারণত বাজারে সঠিকভাবে কার্যকরী টোনার পাওয়ার জন্য অনেক টাকা খরচ করতে হয়, কিন্তু আপনি নিজেই ঘরেই কার্যকরী টোনার তৈরি করতে পারেন সহজে।
ঘরোয়া টোনার তৈরির উপায়: সহজ প্রকাশের কৌশল
টোনার তৈরির জন্য বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলোতে প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ব্যবহার করতে পারেন। যেমন: অ্যালোভেরা, গোলাপ জল, সবুজ চা, কোকোনাট ওয়াটার, এবং আপেল সিডার ভিনেগার ইত্যাদি। এই উপাদানগুলোতে রয়েছে নানা প্রকার পুষ্টি যা আপনার ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ভালো।
সবুজ চা টোনার
সবুজ চায়ের মধ্যে অ্যান্টিওক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বকের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এটি ত্বককে সূর্যের রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সহায়ক এবং ত্বকের রুক্ষতা কমাতে সাহায্য করে। এজন্য আপনার প্রয়োজন কিছু সবুজ চা পাতা এবং জল।
প্রস্তুতির প্রণালী:
- ১ কাপ পানি গরম করুন।
- পানিতে ২ টেবিল চামচ সবুজ চা পাতা মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট ঢাকনা দিয়ে রাখতে দিন।
- এরপর এটি ছাঁকুন এবং ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দিন।
- যদি চান তাহলে এতে ১ টেবিল চামচ মধুও মেশাতে পারেন।
এই টোনারটি একটি স্প্রে বোতলে রেখে দিনে দুইবার মুখে ব্যবহার করুন। এটি আপনার ত্বককে প্রাচুর্য ও প্রাণশক্তি যোগাবে।
গোলাপ জল টোনার
গোলাপ জল একটি প্রচলিত ও জনপ্রিয় টোনার। এটি ত্বককে ঠান্ডা করে এবং মুখের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। গোলাপ জলের ব্যবহারের ফলে ত্বক মসৃণ এবং কোমল হয়। উজ্জ্বলত্ব জানিয়ে পাশপাশি এটি ত্বকে নিরেবেশ কাজে লাগায়।
প্রস্তুতির প্রণালী:
- ১ কাপ জল নিন এবং এতে ২টেবিল চামচ শুকনো গোলাপ পাপড়ি মেশান।
- এটি একটি পাত্রে জ্বাল দিয়ে ফুটান এবং এরপর ঠান্ডা হতে দিন।
- পাত্রটি ছাঁকুন এবং একটি পরিষ্কার বোতলে ভরে রাখুন।
এটি হতে পারে আপনার একটি দুর্দান্ত তরল টোনার বিদ্যমান।
আপেল সিডার ভিনেগার টোনার
আপেল সিডার ভিনেগারকে ত্বক সুস্থ রাখতে বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই সুপারিশ করেন। এটি জৈবিকভাবে তৈরি করা হলে ত্বকের তেলীয়তা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ব্যবহারের ফলে স্নিগ্ধতা ষ্ঠানান্তরিত হয়।
প্রস্তুতির প্রণালী:
- ১ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার নিন এবং ৩ টেবিল চামচ জল মেশান।
- ভালভাবে মিশিয়ে মুখে একটি তুলা দিয়ে লাগান।
এই টোনারটি যে কোন ত্বক সমস্যার চিকিৎসায় কার্যকরী হতে পারে এবং এটি ত্বককে আবার জীবন্ত করে তুলতে সাহায্য করবে।
কোকোনাট ওয়াটার টোনার
কোকোনাট ওয়াটার একটি চমৎকার প্রাকৃতিক সার্বিক টোনার। এই টোনার ত্বককে স্নিগ্ধ এবং সতেজ রাখবে এবং ত্বককে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করবে।
প্রস্তুতির প্রণালী:
- ৩/৪ কাপ কোকোনাট ওয়াটার নিন।
- এতে ১ চা চামচ লেবুর রস মেশান।
- ভালো করে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করুন।
এই টোনারটির ব্যবহার আপনার ত্বকে একটি মিষ্টি সুবাস এনে দেবে এবং ত্বকের স্বাস্থ্যে সাহায্য করবে।
এই টোনারগুলো ছাড়াও অন্যান্য হতে পারে যেমন এলোভেরা জেল টোনার। এলোভেরা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী, এটি ত্বককে আরাম দেয় এবং আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
অন্যান্য টোনার তৈরির উপায়
আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে টোনার তৈরির জন্য আপনার আরো কিছু উপাদানের প্রয়োজন হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের আউটডোর পার্টির জন্য মিষ্টি এবং সতেজ প্রাকৃতিক টোনার তৈরি করা যায়। গ্রীষ্মকালে তাজা ফলের রস যেমন তরমুজ, আনারস, বা লেবুর রস ব্যবহার করে টোনার তৈরি করা যেতে পারে। এগুলো ত্বককে সতেজ এবং ঠান্ডা করে।
টোনার ব্যবহারের উপকারিতা
- ত্বকের গভীর পরিচর্যা: টোনার মুখের ময়লা এবং তেলের স্তর পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
- পোর সংকোচন: এটি পোরগুলোকে সংকুচিত করে, যার ফলে ত্বক উজ্জ্বল দেখা যায়।
- ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখা: অনেক ঘরোয়া টোনারে হালকা হাইড্রেটিং উপাদান তোলে।
- গ্রোথ প্রভাব: এই প্রাকৃতিক টোনার ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে এবং সাধারণভাবে স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
টোনার ব্যবহার করার সঠিক পদ্ধতি
টোনার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতির জন্য বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। প্রথমত, সকালে ও রাতে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে টোনার ব্যবহার করুন। একটি তুলার প্যাডে টোনার নিয়ে সোজা মাটিতে বা বিশেষ স্থানগুলোতে লাগান। কিছুক্ষণের জন্য অপেক্ষা করুন যাতে টোনার ত্বকে ভালোভাবে কাজ করতে পারে।
একটি কথা মনে রাখবেন: বিভিন্ন ধরনের স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বিভিন্ন টোনার পারফেক্ট কাজ করতে পারে, তাই সঠিক বাছাই করুন।
এখন ঘরোয়া টোনার তৈরির উপায়: সহজ প্রকাশের কৌশল আপনাকে দিচ্ছে এক নতুন দিগন্ত, আপনার ত্বকের যত্নে। আপনি যদি বাড়িতে তৈরি টোনারের সঠিক উপাদানগুলো বেছে নেন, তাহলে আপনার ত্বক হবে আরও সুন্দর এবং প্রাণবন্ত। নানা ধরনের বিষয়বস্তু নিয়ে টোনার তৈরির মাধ্যমে আপনার প্রিয় ত্বকটি নীরবে হাসবে।
এখনই প্রতিটি পণ্যের প্রয়োগ করুন এবং আপনার ত্বককে সুন্দর, সজীব এবং স্বাস্থ্যকর করে তুলুন। আপনার ত্বক সেখানেই সৃষ্টি হবে!
জেনে রাখুন-
- কোন কাঁচামালের চেষ্টা আগে করুন? যে কোন নতুন পণ্যের উপকারিতা বুঝতে প্রথমে হাতে চেষ্টা করা ভালো।
- টোনার প্রতিদিন ব্যবহার করবেন? তা না হলেও সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন ব্যবহার করা উচিত।
- কোন ধরনের ত্বকের জন্য কোন টোনার? আপনার ত্বকের ধরন বোঝার পর সেই অনুযায়ী টোনার বেছে নিন।
- মধু ব্যবহার করলে কি উপকার? মধু ত্বকে জ্বালাপোড়া কমায় এবং সতেজতা আনে।
- ক্ষতি হতে পারে কি? অত্যধিক বা ভুল উপকরণ ব্যবহারে ত্বকে সমস্যা দেখা দিতে পারে, তাই সাবধানতা অবলম্বন করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।