ধর্ম ডেস্ক : দিন শেষে যখন শরীর ক্লান্ত ও মন অবসন্ন হয়ে পড়ে, তখন ঘুমানোর আগের কিছু সহজ আমল আমাদের জীবনে আশ্চর্য পরিবর্তন আনতে পারে। বিশেষ করে, ঘুমানোর আগে ২১ বার বিসমিল্লাহ পড়লে কি হয়—এই প্রশ্নের উত্তর জানলে অনেকেই অবাক হবেন। ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’—এই পবিত্র বাক্যটি কেবলমাত্র একটি বাক্য নয়; এটি আল্লাহর নামে শুরু করার প্রতীক এবং বরকতের চাবিকাঠি। এটি পড়লে আত্মা প্রশান্তি লাভ করে, মনের অস্থিরতা কমে যায় এবং আল্লাহর কৃপা লাভ হয়। এই আমলটি হাজারো মুসলমানের জীবনে পরিবর্তন এনেছে, আপনি হতে পারেন তার একজন।
Table of Contents
ঘুমানোর আগে ২১ বার বিসমিল্লাহ পড়লে কি হয়: অলৌকিক পরিবর্তনের গোপন রহস্য
অনেকেই জানেন না যে ঘুমানোর আগে ২১ বার বিসমিল্লাহ পড়লে কি হয়, অথচ ইসলামি স্কলাররা যুগ যুগ ধরে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে আসছেন। এই ছোট্ট আমলটির রয়েছে বিশাল ফজিলত ও উপকারিতা। নিচে তার কিছু প্রমাণ-ভিত্তিক উপকার তুলে ধরা হলো:
- মন ও শরীর প্রশান্ত হয়: বিসমিল্লাহ পাঠে মস্তিষ্কে আলফা ওয়েভ বৃদ্ধি পায়, যা ঘুমের আগে মানসিক প্রশান্তি আনে।
- ক্ববু’লিয়্যাতের দরজা খোলে: ঘুমানোর আগে বিসমিল্লাহ পাঠের ফলে আপনি আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন এবং আপনার দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়: শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পেতে বিসমিল্লাহ একটি ঢাল হিসেবে কাজ করে।
- দুঃস্বপ্ন ও ভয়ের কমতি: গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বিসমিল্লাহ পাঠ করলে দুঃস্বপ্ন কমে যায় এবং মন শান্ত থাকে।
ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে বিসমিল্লাহর গুরুত্ব এবং বাস্তব জীবন প্রভাব
ইসলামে প্রত্যেক কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে। হাদিসে আছে, “যে কাজ বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু করা হয় না, তা বরকতহীন হয়ে যায়।” (আবু দাউদ)। বিশেষত ঘুমানোর সময় এই আমলটি করলে আত্মা আল্লাহর জিকিরে নিপতিত থাকে এবং ঘুমটি হয়ে উঠে ইবাদতের সমতুল্য।
প্রখ্যাত ইসলামি বক্তা মুফতি মেনক একবার তার বয়ানে বলেন, “ঘুমের আগে বিসমিল্লাহ পড়া আত্মিক প্রশান্তি এনে দেয় এবং শয়তান থেকে রক্ষা করে।”
বাংলাদেশের অনেক ইসলামিক স্কলার যেমন মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেব তার তাফসীরে এই আমলের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি নিয়মিত এই আমল পালন করে, তার জীবন ধীরে ধীরে আল্লাহমুখী হয়ে ওঠে।”
অভিজ্ঞতায় প্রমাণিত: ঘুমের আগে বিসমিল্লাহ পড়ার বাস্তব উপকারিতা
অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেছেন যে বিসমিল্লাহ পড়ার অভ্যাস তাদের মানসিক চাপ কমিয়েছে, ঘুমের গুণগত মান বাড়িয়েছে এবং প্রতিদিনের কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়িয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আরিফুল ইসলাম জানান, “আমি বিসমিল্লাহ ২১ বার পড়ার অভ্যাস শুরু করার পর, আমার দুঃস্বপ্ন একেবারে চলে গেছে এবং আমি খুব স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুমাতে পারি।”
মানবিক সাইকোলজিস্টরাও বলেন, মন্ত্রোচ্চারণ ও মনোযোগ কেন্দ্রীভূত ধ্যান ঘুমের পূর্ববর্তী স্ট্রেস কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বিসমিল্লাহ উচ্চারণ এই পদ্ধতির একটি কার্যকর রূপ।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিসমিল্লাহ পড়ার উপকারিতা
- রাতে ঘুমের সময় শিশুদের উপর বিসমিল্লাহ পড়ে দিলে তারা দুঃস্বপ্ন থেকে নিরাপদ থাকে।
- শিশুদের আচরণে পরিবর্তন আসে ও তারা অধিক শান্ত হয়।
ঘুমানোর পূর্বে আমলের তালিকা: আরও কিছু উপকারী অভ্যাস
ঘুমানোর আগে বিসমিল্লাহ পাঠের পাশাপাশি কিছু আমল করলে আপনি শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক দিক থেকে লাভবান হবেন:
- আয়াতুল কুরসি পাঠ করুন – এটি আপনাকে রাতব্যাপী শয়তানের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবে।
- তিন কুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস) পাঠ করুন এবং শরীরে ফুঁ দিন।
- সোয়াবের নিয়তে ইস্তিগফার বলুন – দিনভর গোনাহ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।
এই আমলগুলো শুধু ইবাদত নয়, মানসিক শক্তিও বৃদ্ধি করে।
ঘুমানোর আগে ২১ বার বিসমিল্লাহ পড়লে কি হয়—এই প্রশ্নের উত্তর জানতে গিয়ে আমরা দেখলাম এটি কেবল একটি ধর্মীয় আমল নয়, বরং এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপনি যদি আজ থেকেই এই আমল শুরু করেন, তাহলে দেখবেন জীবন ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে। এই পরিবর্তন শুধু ঘুমে নয়, বরং আপনার মানসিক শান্তি, দুশ্চিন্তা মুক্তি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করবে। আজ রাত থেকেই শুরু করুন—আল্লাহর নামে ঘুমানোই হোক আপনার জীবনের শান্তির শুরু।
জেনে রাখুন-
- ঘুমানোর আগে বিসমিল্লাহ কতবার পড়া উচিত?
২১ বার পড়ার নিয়মটি প্রচলিত ও পরীক্ষিত; এটি আত্মিক প্রশান্তির জন্য উপকারী। - বিসমিল্লাহ পড়লে ঘুমে কী উপকার হয়?
এটি মানসিক প্রশান্তি আনে এবং দুঃস্বপ্ন থেকে রক্ষা করে। - বাচ্চাদের জন্য এই আমল কীভাবে কার্যকর?
তাদের ঘুম ভালো হয় এবং আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। - এই আমল কি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত?
বিসমিল্লাহ পড়ার গুরুত্ব নিয়ে অনেক হাদিস আছে, বিশেষত কাজ শুরুর আগে পড়ার উপকারিতা নিয়ে। - কোন সময় এই আমলটি সবচেয়ে উপকারী?
ঘুমানোর ঠিক আগে এই আমল করলে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।