বেলায়েত হুসাইন: মহানবী সা:-এর সাহাবিরা একেকজন একেক কাজে বিশেষ দক্ষ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন অন্যদের তুলনায় খুব দ্রুত দৌড়াতে পারতেন। একবার কাফেররা মহানবী সা:-এর উট চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন এ সাহাবি চোরদের পিছু ধাওয়া করলেন এবং তাদের সবাইকে পরাস্ত করে উট চিনিয়ে আনলেন। শুধু তাই নয়; চোরেরা ভয়ে নিজেদের সামানপত্রও ফেলে রেখে পালিয়ে গেল।
এই সাহাবির আরো একটি বিশেষ মর্যাদা আছে-যখন রাসূল সা: বাইয়াতে রিদওয়ানের শপথ নিলেন তখন তাঁর থেকে তিন তিন বার শপথ নিয়েছেন। আল্লাহর রাসূলের এই সাহাবির নাম হজরত সালামাহ বিন আকওয়া রা:। তিনি বেশ লম্বা, সুঠামদেহী, দ্রুতগামী এবং যথেষ্ঠ সাহসী ছিলেন।
তিনি মদিনা মুনাওয়ারার অদূরে মাররুজ জাহরান নামক এলাকায় থাকতেন। বর্তমানে এ জায়গাটি ফাতেমা উপত্যকা নামেও পরিচিত। ৫ম হিজরির খন্দকের যুদ্ধের পরপরই তিনি ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। অসহায় অবস্থায় মদিনায় এসে আনসারি সাহাবি হজরত আবু তালহা রা:-এর বাড়িতে কাজের দায়িত্ব নেন; তাঁর ঘোড়া চরানো, সেগুলোকে দানা-পানি খাওয়ানো ও দেখভাল করতেন-এর বিনিময়ে হজরত আবু তালহা রা: তাঁর খাওয়া-দাওয়া ও প্রয়োজনীয় জীবনযাপনের ব্যবস্থা করেন।
এরইমধ্যে ৬ হিজরি চলে আসে। এ বছর আল্লাহর রাসূল সা: মক্কার কাফেরদের সাথে হুদাইবিয়ার চুক্তি করেন। ১৪ শ’ সাহাবিকে সাথে নিয়ে মক্কার দিকে রওনা হন তিনি। মদিনা থেকে বের হয়েই জুলহুলাইফায় এসে সবাই ওমরাহর নিয়তে ইহরাম পরিধান করেন। রাসূল সা:-এর সাথে থাকা সাহাবিদের মধ্যে হজরত সালামাহ বিন আকওয়া রা:-ও ছিলেন।
পবিত্র এ কাফেলাটি যখন মক্কার অদূরে হুদাইবিয়ায় পৌঁছল তখন মহানবী সা: সেখানে যাত্রাবিরতি করলেন। এরই মধ্যে কোরাইশ নেতারা জানতে পারল সাহাবিদের সাথে নিয়ে রাসূল সা: মক্কায় আসছেন। তারা বিভিন্ন বাহানা দেখিয়ে আল্লাহর রাসূল সা:-কে ওমরাহ পালনে বাধা দিল এবং তারা রাসূলের কাছে দূত প্রেরণ করল। তখন আল্লাহর রাসূল সা:-ও তাঁর প্রিয় জামাতা হজরত উসমান রা:-কে দূত হিসেবে পাঠালেন মক্কার কাফেরদের কাছে। কেননা, মক্কায় উসমান রা:-এর অনেক আত্মীয়-স্বজন ছিল, অবিশ্বাসীরা অন্তত আত্মীয় হিসেবেও যাতে উসমানকে নিরাপত্তা দেয় এবং তাঁর সাথে কোন রকম শঠতা না করে-মূলত এজন্যই তিনি দূত নির্বাচিত হন।
মক্কায় আসার পর বেশকিছু সময় হজরত উসমান রা:-এর কোন খবর পাওয়া যায় না-এরই মধ্যে চাউর হয়-তিনি নিহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে আল্লাহর রাসূল সা: এখানের একটি গাছের নিচে বসে সাহাবিদের ডাকেন এবং শপথ গ্রহণ করেন যে, আমরা যুদ্ধের ময়দান ত্যাগ করবো না। এ অনুষ্ঠানে সবার আগে যিনি শফথ নেন তিনি হলেন-হজরত আবু সিনান আসাদি রা:। যারা শুরুতে বাইয়াত গ্রহণ করেন তাদের মধ্যে হজরত সালামাহ বিন আকওয়া রা:-ও ছিলেন। শপথ গ্রহণ চলাকালে আল্লাহর রাসূল সা: আওয়াজ করে ডাক দেন, সালামাহ বিন আকওয়া! তখন তিনি কাছেই ছিলেন, উত্তর দিলেন, আল্লাহর রাসূল সা: আমি উপস্থিত, আপনি বলুন……।
তথ্যসূত্র : ডেইলি পাকিস্তান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।