জুমবাংলা ডেস্ক: চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলার ১০টিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। এ সময় জেলায় ভাইরাসের সংক্রমণ হার আরো কমে ৬ শতাংশের নিচে নেমেছে। নগরী ও চার উপজেলায় জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে ৮২ ব্যক্তির শরীরে। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। শহরের এক রোগির মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আজকের রিপোর্ট থেকে এ সব তথ্য জানা যায়।
রিপোর্টে বলা হয়, এন্টিজেন টেস্ট, ফৌজদারহাটস্থ বিআইটিআইডি, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও নগরীর ৮ ল্যাবে গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৪৮১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন পজিটিভ ৮২ জনের মধ্যে শহরের ৪৩ ও ৪ উপজেলার ৩৯ জন। জেলায় করোনায় মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ১ লাখ ৭৪৮ জন। এর মধ্যে শহরের ৭৩ হাজার ৫৫ ও গ্রামের ২৭ হাজার ৬৯৩ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে সর্বোচ্চ ১৬, রাউজানে ১২, রাঙ্গুনিয়ায় ৭ ও আনোয়ারায় ৪ জন রয়েছেন।
গতকাল করোনায় শহরের একজন মারা যান। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ২৬৫ জন হয়েছে। এতে শহরের ৭০২ ও গ্রামের ৫৬৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে করোনামুক্ত হয়েছেন নতুন ১ হাজার ১১৯ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৭৯ হাজার ৬৩৫ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১০ হাজার ১৬৩ জন এবং বাসায় থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৬৯ হাজার ৪৭২ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে যুক্ত হন ১৫৫ এবং ছাড়পত্র নেন ১৮২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৪১২ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে গতকাল সর্বোচ্চ ৫৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে শহরের ১১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৫১টি নমুনায় শহরের ৮ ও গ্রামের ১৫টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১১৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৬ ও গ্রামের ২৪ জনের দেহে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলে। নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন কেন্দ্রে ১৮ জনের এন্টিজেন টেস্ট করা হলে সবক’টিরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৩৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করে শহরের ৫টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫৯টি নমুনার মধ্যে শহরের ৮টি, মেডিকেল সেন্টারে ১৮ নমুনা পরীক্ষায় শহরের ২টি এবং এপিক হেলথ কেয়ার হাসপাতালে ১০৪ নমুনায় শহরের ৩টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। মা ও শিশু হাসপাতালে ২০টি, ল্যাব এইডে একটি এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো চট্টগ্রামের ৯টি নমুনা পরীক্ষায় একটিতেও ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও নগরীর বিশেষায়িত কভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
উল্লেখ্য, গতকাল একজনের মৃত্যু হওয়ায় এ মাসের প্রথম ১০ দিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া ভাইরাসের সংক্রমণ হার সাম্প্রতিক সময়ের সর্বনি¤œ নির্ণিত হয়। ৫ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ২৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে আড়াই মাসের সর্বনি¤œ ৭৬ জন নতুন আক্রান্ত ধরা পড়ে। সংক্রমণ হার ছিল ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ, যা ওই সময় পর্যন্ত সবচেয়ে কম ছিল। তবে এদিন ৫ করোনা রোগির মৃত্যু হয়।
এদিকে, চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলার মধ্যে মাত্র ৪টিতে গতকাল রোগি শনাক্ত হয়। বাকী দশটিতে একজনেরও করোনা শনাক্ত হয়নি। করোনার প্রথম ঢেউ থেকে পূর্ণমাত্রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ হওয়ার পর একদিনে একসাথে দশ উপজেলায় রোগি না থাকার নজির এটাই প্রথম।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ, সিভাসু’তে ১৫ দশমিক ২৩, চবি’তে ২৬ দশমিক ৩১, শেভরনে ১ দশমিক ২৫, ইম্পেরিয়ালে ১৩ দশমিক ৫৬, মেডিকেল সেন্টারে ১১ দশমিক ১১ এবং এপিক হেলথ কেয়ার হাসপাতালে ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। এন্টিজেন টেস্ট, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ল্যাব এইডে আক্রান্তের হার ছিল ০ শতাংশ। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।