জুমবাংলা ডেস্ক : বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জেএম সেন হল পূজামণ্ডপে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ইসলামী গান গাওয়ার ঘটনায় পূজা উদযাপন কমিটির এক নেতা ও গান গাওয়া চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজ সন্ধ্যায় নগরীর কোতোয়ালী থানায় সাত জনকে আসামি করে এই মামলা করেন চট্টগ্রাম মহানগরী পূজা উদযাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুকান্ত মহাজন।
মামলার আসামিরা হলো- পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্ত, গান পরিবশেন করা চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্য শহীদুল করিম, মো. নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ ইকবাল, রনি, গোলাম মোস্তফা ও মো. মামুন। এর মধ্যে ঘটনার দিন রাতে আটক হওয়া শহীদুল করিম ও মো. নুরুল ইসলামকে গান পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও গোলমাল সৃষ্টির অভিযোগে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগরী পূজা উদাযপন পরিষদের পক্ষ থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির চেষ্টার অভিযোগে এজাহার দায়েরের প্রেক্ষিতে এ মামলা হয়েছে।’
মামলার বাদী চট্টগ্রাম মহানগরী পূজা উদযাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুকান্ত মহাজনও মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লায়ন আশীষ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেনকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযপান কমিটি কেন্দ্রীয় পরিষদ। আজ বিকেলে পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শচীন্দ্র নাথ বাড়ৈর সই করা এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
জেএম সেন হলের পূজামণ্ডপে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও গোলমাল সৃষ্টির অভিযোগে দুজনকে আটক করে পুলিশ। গতকাল রাত ও আজ সকালে মহানগর এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয় বলে দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান নগর পুলিশের উপ–কমিশনার ও সিএমপি মুখপাত্র রইস উদ্দিন।
চট্টগ্রামে পূজামঞ্চে ‘ইসলামি গান’, আসলে কী ঘটেছিলচট্টগ্রামে পূজামঞ্চে ‘ইসলামি গান’, আসলে কী ঘটেছিল
আটক দুজন হলেন–মাদ্রাসা শিক্ষক শহিদুল করিম (৪২) ও আরেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নুরুল ইসলাম (৩৪)। গান গাওয়া বাকিদেরও আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
উপ–পুলিশ কমিশনার জানান, ওই দুজনকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এটা পরিকল্পিত কোনো ঘটনা কি না, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাঁকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উদযাপন অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও গোলমাল সৃষ্টির ঘটনায় ওই দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের গাওয়া একটি গানের ভাষার শব্দ চয়ন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার উপস্থাপক ও পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্যদের মঞ্চে ডাকেন। মঞ্চে ওঠেন ৬-৭ জন তরুণ। তাঁরা সেখানে দুটি গান পরিবেশন করেন।
প্রথম পরিবেশন করেন, ‘গেরামের নওজোয়ান, হিন্দু মুসলান’ গানটি। এর পর তাঁরা ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম/ বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’ ইসলামি গানটি পরিবেশন করলে উপস্থিত সকলে হকচকিয়ে যান।
এই গানের একটা লাইন ছিল-‘বিশ্ব মানুষের মুক্তির শেষ পথ বিপ্লব, ইসলামী বিপ্লব’। গানটির গীতিকার চৌধুরী আবদুল হালিম। পরে উপস্থিত নেতারা ও কয়েকজন বিএনপি নেতার হস্তক্ষেপে তাঁরা মঞ্চ ত্যাগ করেন।
সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে এবং এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে রাতেই চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা পূজা মণ্ডপে ছুটে যান। তাঁরা পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
রমনা কালী মন্দির পরিদর্শন করলেন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।