জুমবাংলা ডেস্ক : মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর এক দিন ঈদ উদযাপনে মেতে উঠেন বিশ্বের সকল মুসলমানরা।
বাংলাদেশে মুসলমানরা চাঁদ দেখে ঈদ করলেও চাঁদপুরের কিছু এলাকায় ঈদ পালন হয় মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে। তবে গত বছর বছর চাঁদপুরে ঘটেছে ব্যতিক্রমী ঘটনা। এক দিনের ঈদ এ জেলায় এবার পালন হয়েছে আলাদা আলাদা তিন দিনে।
চাঁদপুরের প্রায় অর্ধশত গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগামীকাল মঙ্গলবার রোজা শেষ করবেন। এবং পর দিন পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেবেন তারা।
এভাবে ঈদ পালনের কারণ চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাকের চালু করা রেওয়াজ। ১৯২৮ সাল থেকে চালু করা ওই রেওয়াজ অনুযায়ী, বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে ঈদসহ ধর্মীয় অনুশাসন পালন করা হয়।
১৯২৮ সাল থেকে তার অনুসারীরা রোজা, ঈদসহ ধর্মীয় উৎসবগুলো এভাবেই পালন করে আসছেন। তবে এই বছর তার অনুসারীদের মধ্যে মতের অমিল দেখা দেয়ায় দুই পক্ষ দুই দিন ঈদ পালন করেছেন।
দরবার শরীফের পীর মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী বলেন, আমাদের হানাফি মাজহাবের আকিদা অনুযায়ী, বিশ্বের যেকোনো স্থানে প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদ উদযাপন করা হয়।
পীর যাকারিয়ার ছেলে পীরজাদা খাজা বাকী বিল্লাহ মিসকাত চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চাঁদ দেখার খবর নিশ্চিত হয়েই ঈদ পালন করি।’
তিনি দাবি করেন, আগে চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামের মানুষ এই রীতি মেনে চললেও বর্তমানে অর্ধশত গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ এই রীতিতে ঈদ পালন করেন।
দুই দিন ঈদ পালনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার বাবা হলেন আমার দাদার খেলাফতপ্রাপ্ত পীর। আমার ছয় বাপ চাচার মধ্যে চারজনই আমাদের সাথে নামাজ পড়েছে। আমরা সঠিক দিনেই ঈদ পালন করেছি।
জেলার হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব, কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার অন্তত ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষও তাদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন বলে জানান তিনি।
প্রথম দিকে এটা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে জানিয়ে মুফতি কামাল বলেন, ‘অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত হলো, ভৌগলিক এলাকা অনুযায়ী যেখানে চাঁদ দেখা যাবে, ওই ভূখন্ডের জন্য সেখানে ওই চাঁদের হুকুম হবে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন চাঁদপুর জেলা শাখার উপপরিচালক ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘এভাবে অন্য দেশের সাথে মিল রেখে বা অন্য দেশে চাঁদ দেখার খবরে রোজা রাখা বা ঈদ পালন করা কোনোভাবেই ঠিক নয়। আমরা ওই অঞ্চলের মসজিদের ইমামদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করে আসছি। মানা না মানা তাদের বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এইভাবে রোজা রাখা বা ঈদ পালন করা জায়েজ আছে কি না তা আমরা ফতোয়া দিতে পারি না। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এমন কোনো নির্দেশ আমাদের কাছে আসেনি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।