মাহফুজ নান্টু : ছোট্ট একটি স্যাটেলাইট। চাঁদের আশপাশ পরিভ্রমণ করে নিয়ে আসবে তথ্য। সেই তথ্য দিয়ে চালানো হবে গবেষণা।
সব ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে নাসা থেকে চাঁদের উদ্দেশে উড়াল দেবে স্যাটেলাইটটি। এটি নির্মাণে কাজ করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সঞ্জিত মণ্ডল ও তার টিমের সদস্যরা।
সঞ্জিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে মাস্টার্স করছেন। পাশাপাশি রোবটিক্স নিয়ে কাজ করছেন।
কুমিল্লায় রোবটিক্স নিয়ে কাজ করে বেশ জনপ্রিয়তা পান সঞ্জিত। কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সহায়তায় রোবট ‘নিকো’ তৈরি করে সাড়া ফেলেছিলেন সঞ্জিত ও তার দলের সদস্যরা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা স্যাটেলাইট নিয়ে কাজ করবে, এমন ২২টি টিমকে নির্বাচন করে। সেই ২২টির মধ্যে সঞ্জিতের দল ‘টিম বাংলাদেশ’ও রয়েছে।
বাংলাদেশের এই টিমের কাছে স্যাটেলাইটের ডিজাইন ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠিয়েছে নাসা।
সঞ্জীবের টিমের কাজ হচ্ছে পরিপূর্ণ স্যাটেলাইট বানিয়ে তা নাসার কাছে পাঠানো। পরে নাসা সেটি চাঁদে পাঠাবে।
সঞ্জীব জানান, স্যাটেলাইটটির ওজন সর্বোচ্চ ২০ গ্রাম হবে বলে শর্ত দিয়েছে নাসা, কিন্তু ‘টিম বাংলাদেশ’ তা আরও ছোট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই স্যাটেলাইটের কাজ হবে চাঁদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা।
২০২৪ সালে এই স্যাটেলাইট চাঁদের উদ্দেশে পাঠানোর সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্যাটেলাইট তৈরি ও উৎক্ষেপণ মিশন নিয়ে সঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘আমরা একটা স্যাটেলাইট তৈরি করছি। স্যাটেলাইটের যাবতীয় সরঞ্জাম নাসা আমাদেরকে প্রোভাইড করেছে। এটুআই আমাদের ল্যাব সাপোর্ট দিচ্ছে। নাসা আমাদের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও রেখেছে। আমি এবং আমার টিম সফলভাবে ভার্চুয়াল ট্রেনিংটি সম্পন্ন করেছি।
‘স্যাটেলাইট তৈরি করার পর ওই স্যাটেলাইটের প্রোগ্রামিং আমাদেরই করতে হবে এবং খুব সম্ভবত সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে বাংলার মাটি থেকে নির্মিত প্রথম স্যাটেলাইট অবতরণ করবে চাঁদের মাটিতে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের স্যাটেলাইট চাঁদের মাটিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেবে নাসা। আমাদের স্যাটেলাইট তৈরির কাজটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর তা নাসার কাছে সাবমিট করব।
‘আরও যাচাই-বাছাই শেষ করে গ্রিন সিগন্যাল পেলেই আমাদের তৈরি স্যাটেলাইটটি নাসা সম্ভবত ২০২৪ সালে চাঁদে পৌঁছে দেবে। স্যাটেলাইট চাঁদে যাওয়ার পর আমরা স্যাটেলাইট থেকে চাঁদের সব ধরনের তথ্য সরাসরি বাংলাদেশে বসেই পাব।’
এ গবেষক বলেন, “আমরা সেই ডেটাগুলো অ্যানালাইসিস করব আমাদের নিজস্ব ফিউচার মিশনের কাজে ব্যবহার করার জন্য। আমাদের টিমের নাম ‘টিম বাংলাদেশ’। আমি টিমের অ্যাস্ট্রোফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রো রোবটিক্স স্পেশালিস্টের দায়িত্ব আছি। আমাদের টিমের টিম লিডার জাহিদ হাসান শোভন (ইয়ং প্রফেশনাল এটুআই)।
“চাঁদে যাওয়ার ফাইনাল ডেট (চূড়ান্ত তারিখ) আমাদের নাসা জানাবে। তাই আগেভাগে কিছু বলতে পারছি না, তবে লঞ্চিংয়ের কয়েক মাস আগে জানতে পারব। আমরা যে স্যাটেলাইট নিয়ে কাজ করছি সেটি পৃথিবীর সর্বাধুনিক ফেমটো স্যাটেলাইট। আয়তনের ছোট এবং অত্যন্ত কম ভরসম্পন্ন দ্রুততম ডেটা ট্রান্সমিশন স্যাটেলাইট।’’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।