জুমবাংলা ডেস্ক: চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানগুলোর আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। বাগানের ছোট গাছগুলোতে মুকুল আসলেও কিছু কিছু বাগানের বড় আম গাছে তুলনামূলক মুকুল কম এসেছে। আশা করা হচ্ছে, ফাল্গুনের প্রথম সপ্তাহ ধরে গাছে মুকুল আসবে। এবার আমের জন্য অনইয়ার হওয়ায় গাছগুলোতে শতভাগ মুকুলিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ।
গতবছর প্রলম্বিত শীতের কারণে মুকুল কম হওয়ায় আমের ফলনও কম হয়েছিলো। কিন্তু চলতি বছর গাছগুলোতে মুকুল আসায় আমের বাম্পার ফলন হবে এমনই প্রত্যাশা বাগান মালিকদের।
গত বছর যেসব গাছে মুকুল হয়নি, সেসব গাছে এই বছর আগাম মুকুল এসেছে। এছাড়াও নতুন নাবি জাতের আম বাগানের গাছ গুলোতে ইতোমধ্যে অনেক মুকুল দেখা গেছে। অনেক গাছে আবার মুকুল থেকে আমের গুটিও বের হয়েছে। ফলে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যাচ্ছে মালিক ও শ্রমিকদের।
জেলা কৃষি সম্প্রারণের তথ্যমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৫৮৮ হেক্টর জমিতে ২৮ লাখ ২৬ হাজার ৬৪৮টি আম গাছ রয়েছে। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর, শিবগঞ্জ উপজেলায় ২০ হাজার ২৬০ হেক্টর, গোমস্তাপুর উপজেলায় ৪ হাজার ২৩০ হেক্টর, নাচোল উপজেলায় ৪ হাজার ২৭১ হেক্টর এবং ভোলাহাট উপজেলায় ৩ হাজার ৬৬২ হেক্টর জমিতে আম গাছ রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনান্য আমের তুলনায় সবচেয়ে বেশি আশ্বিনা আমের আবাদ হচ্ছে। এই বছর জেলাজুড়ে মোট ৯ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমিতে আশ্বিনা আমের চাষ করছেন কৃষকরা। এছাড়াও জেলার অনান্য উপজেলার মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বিভিন্ন জাতের আম গাছ রয়েছে। এই উপজেলায় প্রায় ১৫ লাখ ১৫ হাজার ৬০টি আম গাছে বিভিন্ন জাতের আম চাষ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা। তিনি আতাহারের নয়ানগর এলাকায় প্রায় ৩২ বিঘা জমিতে দেশি-বিদেশি অন্তত ৪০ জাতের আমের আবাদ করছেন।
গোলাম মোস্তাফা বলেন, ‘চলতি বছর আমগাছ গুলোতে আশা অনুযায়ী মুকুল এসেছে। উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিড জাত) আমের গাছ গুলোতে আগাম মুকুল এসেছে এই বছর। কিছু দিনের মধ্যেই বাগানের সব গাছ গুলোতে মুকুল চলে আসবে। এরপরই আমের গুটি বের হতে শুরু করবে। বাগানের গাছগুলো এখন পরিচর্যা করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় আমের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
শিবগঞ্জ উপজেলার মুনিরুল ইসলাম ওরফে মুনি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে আমের আবাদ করছেন। তার ধারাবাহিকতায় এই বছরও প্রায় ১০ বিঘা জমিতে আম চাষাবাদ করেছেন। মুনি বলেন, ‘বাগানের ছোট-মাঝারি গাছগুলোতে আশানুরুপ মুকুল এসেছে। কিছুটা হলেও ব্যতিক্রম বাগানের পুরাতন আম গাছে গুলো। যদিও প্রায় অনেক গাছে মুকুল এসেছে। পুরাতন আম গাছগুলোতে খাদ্য সঙ্কটের কারণে মুকুলের পরিবর্তে গাছের ডগায় কচি পাতা বের হয়েছে। মুকুলের অবস্থা আর আবহাওয়া ঠিক থাকলে আমের বাম্পার ফলন হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, ‘এই বছর মুকুল পর্যাপ্ত এসেছে। কিছু উচ্চ ফলনশীল গাছে মুকুল ফুটে আমের গুটিও দেখা দিতে শুরু করেছে। বাগানগুলো মালিক ও শ্রমিকরা পরিচর্যা করছেন। এই সময়ে বাগানের জন্য বৃষ্টি প্রয়োজন। এতে করে আমের মুকুল গুলো রোদ থেকে বাঁচবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলো থেকে গুটি বের হতে শুরু করবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই বছর আমের জন্য অনইয়ার অর্থাৎ উচ্চ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার বাগানের প্রায় ৮৫ শতাংশ আম গাছ মুকুলিত হয়ে গেছে। চলতি বছর গাছগুলো শতভাগ মুকুল ফোটার অপার সম্ভাবনা রয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।