জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম রনকাইল। এ গ্রামের বিশাল একটি বিল রয়েছে যার নাম ‘চাঁপাই বিল’। এ বিলটিতে প্রায় বছরজুড়েই থাকে পানি। শীত মৌসুমে বিলটি শুকিয়ে গেলে সেখানে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করা হয়। কিন্তু বাকি সময় থইথই পানিতে ভরা থাকে বিলটি। দেশি মাছের ছড়াছড়ি রয়েছে এ বিলে। ফলে বছরজুড়ে এ বিল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন কয়েক শ মৎস্যজীবী।
বর্তমানে বিলটির আরেকটি পরিচয় ‘গোলাপি পদ্ম বিল’ হিসেবে। বিশাল এ বিল জুড়ে এখন শুধুই গোলাপি-লাল-সাদার সংমিশ্রণে ফোটা পদ্ম শোভা পাচ্ছে। যেদিকে চোখ যায় শুধু পদ্ম ফুলের সমারোহ। গোলাপি, লাল আর সাদা রঙের মিশ্রণে পদ্ম ফুলগুলো যেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য বিলিয়ে দিচ্ছে। ফলে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সৌন্দর্যপিপাসুরা বিলটিতে আসছেন। নৌকায় চড়ে বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি তারা ছবি তুলে, নেচে-গেয়ে আনন্দে করছেন।
প্রতিদিন বিকালে সব বয়সী নারী-পুরুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় বিলটি। ফরিদপুর শহর থেকে আলাউদ্দিন, জহির রায়হান, লাবণী, ঈশিতাসহ বেশ কয়েকজন লাল পদ্ম দেখতে এসেছেন এ বিলে। তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এত বড় বিল আর এত পদ্ম ফুল তারা আগে কখনো দেখেননি। পদ্ম ফুল দেখে এবং ছবি তুলে তারা বেশ আনন্দিত।
স্থানীয় কয়েক যুবক জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে এ বিলে পদ্ম ফুলের শোভা দেখতে ছুটে আসেন অনেকেই। দুপুরের পর লোকজন আসা শুরু হয়। অনেক সময় রাত অবধি থাকেন তারা। তবে যারা এ বিলে আসেন তারা পদ্ম ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যান। এটি বন্ধ হওয়া দরকার। বিলে নৌকা নিয়ে ভ্রমণপিপাসুদের ঘুরতে সাহায্য করেন হরেন নামে এক মাঝি।
তিনি বলেন, ‘অনেকেই আসেন, তাদের নৌকায় নিয়ে ঘুরতে সাহায্য করি। এ থেকে কিছু টাকা পাই তা দিয়ে আমার সংসার চলে।’ স্থানীয় কয়েক মুরুব্বি জানান, ছোটবেলায় এ বিল থেকে শাপলা-শালুক তুলে হাটে বিক্রি করেছেন। কয়েক বছর ধরে এ বিলে লাল পদ্ম ফুটছে। অনেকেই তা তুলে নিয়ে বাজারে বিক্রি করেন। গ্রামের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখনো পদ্মপাতায় খাবার পরিবেশন করা হয়।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, এ বিলটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসনের এগিয়ে আসা উচিত। বিলটিতে বছরে চার মাস পদ্ম ফুল ফোটে। এ ফুলগুলো টিকিয়ে রাখতে এবং সৌন্দর্যপ্রেমীদের যাতায়াত ব্যবস্থাসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য একটি পর্যবেক্ষণ টিম করা যেতে পারে।
ফরিদপুর পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুজাউজ্জামান জুয়েল বলেন, এ বিলটি ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা দরকার। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।
কানাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, এ বিলটি কানাইপুরের সুনাম বৃদ্ধি করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ ও সৌন্দর্য পিপাসুরা আসেন এ বিলে। এ বিলে আসা মানুষ নানা সমস্যার মধ্যে পড়েন। সেই কথা চিন্তা করে সেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য টিউবয়েল বসানো হয়েছে। যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। সোলার লাইট লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিলটি ঘিরে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ ও পর্যটন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।