জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে, যেখানে উপ-উপাচার্য সাদিয়া সম্বোধন করে একটি মেয়ের সঙ্গে কথা বলছেন। মেয়েটির সঙ্গে নূরুল হুদা নামে একজনকে চাকরি পাইয়ে দেয়া নিয়ে দর কষাকষি করতে শোনা গেছে উপ-উপাচার্যকে। তবে সেখানে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপ-উপাচার্যের সঙ্গে ফোনালাপ করা সাদিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরিপ্রার্থী ছিলেন তার স্বামী ও আইন বিভাগের সাবেক (বিভাগের ৩৪ ব্যাচের) শিক্ষার্থী নূরুল হুদা। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে অনার্সে ৩.৬৫ ও মাস্টার্সে ৩.৬০ সিজিপিএ পেয়ে পাস করেন। আইন অনুষদে সেরা হওয়ায় ২০১৭ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক এবং ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পান। তার বাড়ি চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়ার এলাকা লালমনিরহাটে।
ফোনালাপটি হুবহু তুলে দেওয়া হলো:
উপ-উপাচার্য চৌধুরী জাকারিয়া : হ্যাঁ সাদিয়া, আমি প্রফেসর জাকারিয়া, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর।
সাদিয়া : আসসালামু আলাইকুম স্যার।
উপ-উপাচার্য : ওয়ালাইকুম আসসালাম। আচ্ছা মা, একটা কথা বল তো। আমার খুব শুনতে ইচ্ছা যে, এখানে তোমরা কত টাকা দেওয়ার জন্য রেডি আছো?
সাদিয়া : স্যার সত্যি কথা বলতে…
উপ-উপাচার্য: না না, সত্যি কথাই তো বলবা। ওপরে আল্লাহ তায়ালা, নিচে আমি।
সাদিয়া : অবশ্যই, অবশ্যই। স্যার, আপনি যেহেতু তার অবস্থা জানেন, আরেকটা বিষয় এখানে স্যার। সেটা হচ্ছে, আপনি হুদার…মানে, এমনিতে সে কতটা স্ট্রিক্ট…। আপনি বোধহয় এটাও জানেন স্যার, একটু রগচটা ছেলে।
উপ-উপাচার্য : আচ্ছা রাখো, এখান থেকে কথা বলা যাবে না ।
রেকর্ডের বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়াকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এম এ বারীকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘যেখানে ভিসি, প্রোভিসি রয়েছেন, সেখানে আমি মন্তব্য করবো না।’
নূরুল হুদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘আপনারা সাংবাদিক, অনেক কিছুই জানেন। আমার এই বিষয়ে কিছু বলার নেই।’
অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া এ বিষয়ে মঙ্গলবার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘নুরুল হুদা দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার ছাত্র জীবনের শুরু থেকে আমি স্থানীয় অভিভাবক হিসেবে দেখভাল করছি। তার লেখাপড়ার চলমান রাখতে তাকে দুটি স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে বিশ্বস্তসূত্রে জানতে পারি নুরুল হুদা চাকরি পেতে অসাধু কিছু ব্যক্তির কবলে পড়ে আর্থিক লেনদেনে জড়িয়ে পড়েছে। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে ইসলামী ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার একটি স্লিপও আমার নজরে আসে। স্থানীয় অভিভাবক হিসেবে তার এহেন অসাধুকর্ম রোধে খোঁজ নেওয়ার জন্য তার স্ত্রীকে ফোন দিয়েছিলাম। কারণ হুদার স্ত্রীর বাড়ি সৈয়দপুরে। হুদার স্ত্রী সে সময় ব্যাংক লেনদেনের বিষয়টি স্বীকারও করে বিস্তারিত বলতে রাজি হয়নি।’
ফাঁস হওয়ার অডিও এডিট করা হয়েছে বলেও দাবি করেন উপ-উপাচার্য জাকারিয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।