জুমবাংলা ডেস্ক : আপন চাচির অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় খুন হয় ৩ বছরের শিশু সায়েল আহমদ ওরফে সোহেল। রবিবার সকালে বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে চাচি ও তার পরকিয়া প্রেমিক শিশু সায়েলকে খুনের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সোমবার বিকালে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন সুরমা বেগম। এ ছাড়া সুরমার কথিত প্রেমিকা অপর আসামি নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিমকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ম আদালতের বিচারক নওরীন করিম তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
তারা পুলিশের কাছে জানায়, রবিবার সকাল ৬টার দিকে ভিকটিম সায়েল ও তার ভাই আরিফ আম কুড়ানোর জন্য চাচি সুরমা বেগমের বসতঘরের সামনে যায়। আম কুড়ানো শেষে সে চাচির বসতঘরের ভিতরে প্রবেশ করলে নাহিদুল ও সুরমা বেগমের অনৈতিক মেলামেশা দেখে চিৎকার শুরু করে। তখন নাহিদুলের নির্দেশে চাচি সুরমা বেগম গাছের ডাল দিয়ে ওই শিশুর মাথায় আঘাত করলে সে অজ্ঞান হয়ে মাঠিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন চাচি ও তার প্রেমিক ওই শিশুর নাক-মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে গোসলখানায় থাকা একটি প্লাষ্টিকের ড্রামে ঢুকিয়ে কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনার পর দিনভর সায়েলকে খোঁজা হলেও কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। মসজিদের মাইকেও তার নিখোঁজ প্রচারণা চালানো হয়। এ সময় সুরমা বেগম তার বসতঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখাসহ রহস্যজনক আচরণ করতে থাকেন। এতে নিহত শিশুর পিতাসহ এলাকার লোকজনের সন্দেহ হলে তারা চাচির বসতঘরে প্রবেশ করে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে সুরমা বেগমের গোসলখানায় রাখা ড্রামের ভিতর কম্বল দিয়ে মোড়ানো শিশু সায়েলের নিথর দেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় নিহত সায়েলের পিতা খসরু মিয়া বাদি হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবণী শংকর কর জানান, মামলা দায়েরের পর আমরা ঘটনাস্থল থেকে আটক নাহিদুল ইসলাম ও সুরমা বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছি।
আদালতে সুরমা বেগমের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বলেন, প্রেমিক ইব্রাহীমের সঙ্গে সুরমা বেগমের অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার সময় শিশু সায়েল দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বসতঘরের গোসল খানায় ড্রামে কম্বল মোড়ানো অবস্থায় শিশু সায়েলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরমা বেগম হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং অপর আসামি ইব্রাহীমকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।