জুমবাংলা ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ (৯ জুন) সন্ধ্যায় লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন। আগামী ১০ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত চার দিন যুক্তরাজ্য সফর করবেন তিনি।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের উপর জোর দিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নবায়নে কাজ করছে দুই দেশ।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ৯ জুন লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর্। অধ্যাপক ইউনূস রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পাশাপাশি অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করবেন।’
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এবং বৈচিত্র্যময়। এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
এই সফরকালে, রাজা তৃতীয় চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে অধ্যাপক ইউনূসকে মর্যাদাপূর্ণ ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান করবেন। মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে শান্তি, স্থায়িত্ব এবং সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আজীবন প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেসে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। ২০২৪ সালে জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব বান কি-মুনও এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি, অন্যান্য সিনিয়র মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা এবং যুক্তরাজ্যের নীতি ও ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গেও অধ্যাপক ইউনূস দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই সফরটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ যুক্তরাজ্য একটি শীর্ষস্থানীয় গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গণতান্ত্রিক নীতি এবং সুশাসনের প্রচারকে মূল্য দেয়।
তিনি বলেন, এই সফর বাংলাদেশের চলমান সংস্কার উদ্যোগ, গণতান্ত্রিক পথচলা এবং সুশাসনের প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার তুলে ধরার সুযোগ করে দেবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘সর্বোপরি’ একজন নোবেল বিজয়ী ও বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার বিশ্বজুড়ে একটি অনন্য এবং ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে। তার মতো একজন ব্যক্তিত্বের যুক্তরাজ্য সফর বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও উন্নত এবং সুসংহত করবে।
সফরের সময় আলোচনায় বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন, রোহিঙ্গা সংকট ও অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়।
বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্রিটিশ দক্ষতা এবং সম্পদের ব্যবহার করা হবে এই কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
অধ্যাপক ইউনূসের কমনওয়েলথ এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্র সংস্থার (আইএমও) মহাসচিবদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে। যা বাংলাদেশের বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততাকে আরও জোরদার করবে।
তার পাবলিক কূটনীতি উদ্যোগের অংশ হিসেবে, প্রধান উপদেষ্টা ১১ জুন চ্যাথাম হাউস – রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে একটি মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।
তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং ভবিষ্যত দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন।
পাচার করা অর্থ এবং বিদেশি সম্পদ পুনরুদ্ধারও আলোচনায় অগ্রাধিকার পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের বলেন, চুরি যাওয়া অর্থ ও সম্পদ পুনরুদ্ধারের চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডন সফরের সময় প্রধান উপদেষ্টা এই বিষয়টি উত্থাপন করবেন।
সরকারের মতে, পূর্ববর্তী প্রশাসনের অধীনে প্রতি বছর আনুমানিক ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছিল।
প্রধান উপদেষ্টা এরই মধ্যে ঢাকায় অবস্থিত তার হাইকমিশনারের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা চেয়েছেন, যাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্বারা যুক্তরাজ্যে পাচার করা তহবিল শনাক্ত ও পুনরুদ্ধার করা যায়।-ইউএনবি
থাইল্যান্ডে চিকিৎসা শেষে রাতে দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।