লাইফস্টাইল ডেস্ক : বিবাহ বিষয়ক বিখ্যাত থেরাপিস্ট জন গটম্যানের মতে, দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটে ৪ ধরনের আচরণে। প্রায় ৪০ বছর ধরে এই মনোবিজ্ঞানী এবং তার গটম্যান ইনস্টিটিউটের কর্মীরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের গবেষণায় সম্পর্ক ভাঙনের বহু উপাদান উঠে এসেছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞের মতে, ৪টি উপাদান মৌলিক।
এগুলো সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে এদের থেকে দূর থাকার জন্যেও পরামর্শ দিয়েছেন।
১. কটাক্ষ করা : এটা কেবল সঙ্গী-সঙ্গিনীকে নিয়ে অভিযোগের তালিকাই নয়। গটম্যান ইনস্টিটিউটের গবেষক এলি লিসিস্টা জানান, অভিযোগ সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো আচরণকে কেন্দ্র করে উত্থাপিত হয়। আবেগে আঘাত দিতে এটা মৌখিক আক্রমণ।
এড়িয়ে যাবেন যেভাবে :
ক. সঙ্গী-সঙ্গিনীর কোন বিষয়টা আপনাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে তা আগে বের করুন। কারণ জানার পর আপনার কটাক্ষসুলভ মন্তব্যকে অভিযোগে পরিণত করুন। এটিও এমনভাবে বলুন যেন তাতে আপনি কি চান তা পরিষ্কার থাকে। যেমন- যদি তুমি জুতা শোয়ার ঘরের বাইরে রেখে আসো তাহলে বিষয়টি আমার ভালো লাগবে।
খ. মনে যা রয়েছে যা পুরোটা ঢেলে দিবেন না। যদি তার কোনো বিষয়ে আপনার মনে অনেক অভিযোগ থাকে, তবে তার সবটাই বলে দিতে নেই। মাঝে মাঝে কিছুটা জানান দিতে পারেন। কিন্তু সব নিয়ে একবারে বসে পড়া উচিত নয়।
গ. কটাক্ষ করে সরাসর না বলে তাকে আপনার ইচ্ছা হিসাবে প্রকাশ করুন। ভদ্রভাবে মনের কথার জানান দিন।
২. অবজ্ঞা : এটি সবচেয়ে বাজে বিষয়। বিচ্ছেদের বড় উপলক্ষ হয়ে ওঠে। অপমানজনক কৌতুক, চোখ পাকানো বা বিদ্রূপ এ আচরণের মধ্যে পড়ে।
এড়িয়ে যাবেন যেভাবে :
ক. আপনাদের মধ্যে কি সমস্যা রয়েছে তা প্রকাশ না করে জানান, আপনাদের জন্যে কোনটা সত্য। অবজ্ঞার মাধ্যমে দুজনের মধ্যে কেবল দূরত্বই বাড়বে। এটা না করে সঙ্গী-সঙ্গিনীর ভুলটা শনাক্ত করে দিন।
খ. অপরের কোন বিষয়গুলো আপনি পছন্দ করেন ও সম্মানের চোখে দেখেন তা ফুটিয়ে তুলুন। এর জানান দিন। এটা খুব সামান্য বিষয় হতে পারে। কিন্তু বলে দিন। বিষয়টা অনেক সামলে নেওয়া যাবে।
গ. যখনই কিছু বলছেন, তখন আপনার বক্তব্যটাই আসল কথা। আপনার প্রতিটি কথা অর্থ প্রকাশ করে। হয়তো আপনার সঙ্গী-সঙ্গিনী কোনো সমস্যা নয়। সম্যানো অন্য কোথাও।
৩. আত্মরক্ষামূলক আচরণ : নিজের কোনো সমস্যাকে ঢাকতে বা নিজেকে দোষের ভাগ থেকে দূরে রাখতে মানুষ আত্মরক্ষামূলক আচরণ করে, অন্তত সম্পর্কে ক্ষেত্রে।
এড়িয়ে যাবে যেভাবে :
ক. সঙ্গী-সঙ্গিনীর প্রতি সহানুভূতি জ্ঞাপন করুন। তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। যেকোনো ঘটনার কিছু দায়িত্ব নিজের ওপর নিন।
খ. পার্টনারকে বলুন যে আপনার মনে হচ্ছে যে আপনি আক্রমণের মুখে রয়েছেন। এতে তিনি কিছুটা সদয় হবেন।
গ. ক্ষমা করে দিতে এবং ক্ষমা চাইতে পিছ পা হবেন না। নিজের ভুল বুঝতে শিখুন। তার স্বীকার করে নিন। দুঃখ প্রকাশ করুন এবং প্রয়োজনে ক্ষমা চেয়ে নিন।
৪. দেয়াল তৈরি করা : দুজনের মধ্যে কিছু বিষয়ে ব্যক্তিগত দেয়াল থাকতেই পারে। কিন্তু পাথরের মতো নিরেট দেয়াল সৃষ্টি করতে নেই।
এড়িয়ে যাবেন যেভাবে :
ক. অঙ্গভঙ্গী খেয়াল করুন। দেখুন, আচরণে এমন কিছু প্রকাশ পাচ্ছে কিনা যাতে আপনাকে দেয়ালের ওপারের কেউ বলে মনে হচ্ছে। দ্রুত স্পন্দরত হৃদযন্ত্র, ঘন ঘুন শ্বাস টানা ইত্যাদি অনেক অর্থ প্রকাশ করে।
খ. কথোপকথনে নিরাপদ শব্দচয়ন করুন। যখনই কথাবার্তা উত্তাপ ছড়াতে থাকবে তখনই দুজনই স্থিত হোন।
গ. দেয়াল শক্তপোক্তভাবে স্থাপিত হলে দৈহিক ও মানসিকভাবে ঘটনার ওপর কোনো মনোযোগ স্থাপন করা যায় না। যদি মনে হয় নিজেকে সামলাতে পারছেন না, তবে সেখানেই চুপ হয়ে যান। কিছু সময় পর আবারো কথোপকথনে যোগ দিন। সূত্র : হাফিংটন পোস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।