সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : চিনি ও চুন মিশ্রিত ভেজাল খেজুরের গুড় প্রস্তুতের সময় অভিযান চালিয়ে এক ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এসময় ভেজালভাবে প্রস্তুতকৃত প্রায় এক মণ গুড় বিনষ্ট করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) ভোরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ধানধারা গ্রামের মশগুল গুড় ভান্ডারে এই অভিযান চালায় জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: আসাদুজ্জামান রুমেল।
মশগুল গুড় ভান্ডারের সত্তাধিকারী মো. মশগুল ব্যাপারীর বাড়ি রাজশাহী জেলার বাঘা থানায়। তিনি প্রতি শীত মৌসুমে শিবালয় ও হরিরামপুর এলাকায় আসেন এবং রস সংগ্রহ করে গুড় প্রস্তুতের কাজ করেন। দাম সর্বসাধারণের নাগালে রাখতেই ভেজাল গুড় প্রস্তুত করতে হয় বলে দাবী প্রস্তুতকারকের। খোলা বাজারে এই চিনি এবং চুন মিশ্রিত ভেজাল খেজুরের গুড় বিক্রি হয় ২ থেকে ৩শ টাকা। নির্ভেজাল গুড় পেতে ক্রেতাকে গুনতে হবে আরো দুই থেকে তিনগুন টাকা।
স্থানীয়রা জানান, একসময় মানিকগঞ্জের এই অঞ্চলটিতে (হরিরামপুর, শিবালয়) খেজুরের গুড় উৎপাদনের খুবই জনপ্রিয়তা ছিল। এই পেশার সাথে যুক্ত ছিল প্রায় শতাধিক পরিবার। কালের বিবর্তনে এই জনপদ আজ গাছী শূণ্য হয়ে পড়েছে। এ সুযোগে বাহিরের জেলা থেকে গাছীরা এসে রস সংগ্রহ করছে, প্রস্তুত করছে গুড়। এসকল গুড়ে বেশিরভাগই ভেজাল মিশ্রিত। এদের জন্য মানিকগঞ্জের প্রকৃত গাছীদের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।
চিনি ও চুন মিশিয়ে গুড় প্রস্তুতের কথা স্বীকার করে মশগুল ব্যপারী বলেন, খালি রসের গুড়ের প্রতি কেজির দাম পড়ে ৬ থেকে ৭শ টাকা। এত দাম দিয়ে কেউ গুড় কিনতে চায়না। সে জন্য রসের সাথে কিছুটা চিনি মিশিয়ে গুড় তৈরি করে প্রতি কেজি ২শ থেকে ৩শ টাকা দরে বিক্রি করছি। বাধ্য হয়েই আমরা এমনটা করি।
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, মানিকগঞ্জের হাজারি গুড়ের সুনাম দেশ জুড়ে। সেজন্য অন্য জেলা থেকে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী এই জেলায় এসে গুড় তৈরি করে মানিকগঞ্জের গুড় বলে বিক্রয় করছেন। তিনি জানান, ৫০ কেজি গুড়ের মধ্যে ৩০ কেজি চিনি মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করছেন তারা। এবং গুড় সাদা করার জন্য পরিমান মত চুন মিশান। চিনি মিশিয়ে গুড় তৈরি করার দায়ে মশগুল ব্যাপারীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভেজাল গুড় তৈরির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে বলেও জনান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।