নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: রংপুরের পীরগঞ্জের স্বর্ণের দোকান থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণ উদ্ধারে এসে গাজীপুরের কালিয়াকৈর হামলার শিকার হয়েছে ৪ পুলিশসহ ৬ জন। এ সময় পুলিশের কাছ থেকে ওয়াকিটকি ও ২০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। ঘটনার পর খোয়া যাওয়া ওয়্যারলেস সেট উদ্ধার করতে পারলেও বিশ রাউন্ড গুলি এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লীবিদ্যুৎ দিঘির পাড় এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার পুলিশ সদস্যরা হলেন, রংপুরের পীরগঞ্জে থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) মো. কামাল হোসেন, উপ-পরিদর্শক গোপাল চন্দ্র, সহকারী উপ-পরিদর্শক এনায়েত হোসেন ও কনস্টেবল জাহিদ, মামলার বাদী রনি দাস ও তার স্বজন প্রদীপ দাস।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ১৮ নভেম্বর রংপুরের পীরগঞ্জ থানার প্রধান সড়ক সংলগ্ন সুকান্ত কর্মকারের সরকার জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটে। সংঘবদ্ধ চোর দোকানে তালা ভেঙে পিকআপভ্যানে স্বর্ণালংকার ভর্তি সিন্দুকসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় দোকান মালিক পীরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ লুট করা স্বর্ণ উদ্ধার ও চোর দলকে শনাক্ত করতে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে গোপন সংবাদে পুলিশ জানতে পারে, লুটকৃত মালামাল গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় আছে।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাদা পোশাকে পীরগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত)’র নেতৃত্বে বুধবার সন্ধ্যায় কালিয়াকৈর থানা পুলিশের সহযোগিতায় উপজেলার চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ দিঘীরপায় এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে চুরি কাজে ব্যবহৃত পিকআপ চালক কাদের ওরফে ধুক্কাকে আটক করে। পরে চালকের দেওয়া তথ্যমতে স্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ী লিটন হোসেন আটক করে তার স্বর্ণের দোকান থেকে ১৬ ভরি স্বর্ণ ও ৮০ ভরি রূপা উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মাল নিয়ে থানায় আসার সময় চোর দলের সদস্যরা পুলিশ সদস্যদের চ্যালেঞ্জ করে পরিচয় জানতে চান। এসময় পুলিশ সদস্যরা তাদের পরিচয় দেওয়ার পর আটক চালক ধুক্কা, লিটন ও উদ্ধার হওয়া লুট করা মালামাল নিয়ে যেতে বাধা দেয়। দোকানের মালিক লিটন হোসেনের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর ও পুলিশের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে। এ সময় তারা পুলিশের কাছে থাকা ২০ রাউন্ড গুলি, তিনটা ওয়্যারলেস সেট লুট করে। খবর পেয়ে রাতেই কালিয়াকৈর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে আটক করেছে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ওই এলাকা থেকে লুট হওয়া তিনটি ওয়্যারলেস সেট উদ্ধার করতে পারলেও খোয়া যাওয়া ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করতে পারেনি।
কালিয়াকৈর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকবর আলী খান বলেন, পীরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন এলাকাবাসীকে উসকিয়ে দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশের ব্যবহৃত ওয়াকিটকি ও গুলি খোয়া গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে ওয়াকিটকি উদ্ধার করা গেলেও খোয়া যাওয়া গুলি উদ্ধারে অভিযান চলছে। এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদের মধ্যে থেকে নয়জনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।