লাইফস্টাইল ডেস্ক: ‘আইন ব্লিক জাগ্ট মেয়ার আলস থাউজেন্ট ভরটে’ জার্মান ভাষার এ কথাটির মানে হলো: একটি পলক হাজারো শব্দের চেয়েও বেশি কথা বলে। কিন্তু এই চোখই যখন পৃথিবীর সবকিছু আর স্বচ্ছভাবে দেখতে পায় না, তখন আমাদের জীবনে আর দুর্ভোগের শেষ থাকে না।
বর্তমান সময়ে কমবেশি আমরা সবাই চোখের দৃষ্টিগত সমস্যায় ভুগছি। চোখের সমস্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো, চোখে কম বা ঝাপসা দেখা। এ সমস্যা যদিও বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে বর্তমানে ছোটদের পাশাপাশি তরুণরাও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন।
এ বিষয়ে মুনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপথালমোলজির ডিরেক্টর নিকোল মনে করেন, রাস্তায় গিয়ে, মাঠে গিয়ে সুদূরের দিকে তাকিয়ে থাকার অভ্যাস মানুষের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার কারণেই হচ্ছে। পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরও অনেকে এ রোগের শিকার হচ্ছেন। কারণ, তাদের সবুজ আর নীল রঙে তেমন তাকানোর অভ্যাস নেই। চোখের ব্যায়ামের অভাবেও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। তা ছাড়া বেশি পড়াশোনা করা, অফিসের কাজে নিরবচ্ছিন্ন তাকিয়ে থাকা, কম্পিউটার কিংবা মোবাইল স্ক্রিনে অবিরত তাকিয়ে থাকার প্রবণতায়ও এ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোখে ঝাপসা দেখার পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে বড় কোনো কারণ। যেমন, শরীরে ডায়াবেটিস থাকলে কিংবা চোখে ছানি পড়লেও মানুষ চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করে। এ ছাড়া গ্লুকোমার কারণেও চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। গ্লুকোমা হলো যখন চোখ থেকে তরল প্রবাহিত হয় না এমন অবস্থা। এ সমস্যায় চোখের ওপর চাপ পড়ে, যা চোখের স্নায়ু ও রক্তকণিকা ক্ষতিগ্রস্ত করে। আর এতেই দেখতে সমস্যা হতে পারে যেকোনো ব্যক্তির।
জটিল কোনো রোগ না থাকলে চোখের এই ঝাপসা দেখা বা ক্ষীণ দৃষ্টিকে বাড়ানোর কিছু উপায় রয়েছে বলে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালের গবেষকরা মনে করেন। তারা বলেন, ওষুধ খাওয়া বা চশমা পরার পাশাপাশি আপনি যদি ইয়োগা, প্রাণায়াম আর চোখের কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম নিয়মিত করেন, তবে এ সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। এ ছাড়া আপনি যে নিয়মগুলো মেনে চলবেন তা হলো:
১. মোবাইল, কম্পিউটার, টিভির ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় রশ্মি থেকে চোখকে দূরে রাখুন।
২. ভিটামিন এ-জাতীয় খাবার যেমন: মিষ্টি পেঁপে, কাঁঠাল, কুমড়া, কালো কচু শাক, হেলেঞ্চা শাক, পুঁই শাক, লাউ শাক, ধনিয়া পাতা, পাট শাক, গাজর, মিষ্টি আলু, ডিম, কলিজা, মলাঢেলা ছোট্ট মাছ ইত্যাদি খান।
৩. সবসময় চোখকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।
৪. ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, বিটা ক্যারোটিন ও লিউটিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে বিশেষ উপকারী।
৫. ডিমের সাদা অংশ ছাড়াও সবুজ শাক-সবজিতেও থাকে প্রচুর লিউটিন। এসব খাবার ডায়েট লিস্টে রাখুন।
৬. চোখের জ্যোতির জন্য ক্ষতিকর যেমন: সুগার, প্রক্রিয়াজাত ময়দা, ট্রান্সফ্যাট ও ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
৭. চোখের জন্য এরোবিক ব্যায়াম খুব কার্যকরী। তা ছাড়া সাঁতার ও টেনিস খেলা চোখের জ্যোতি বাড়িয়ে দিতে পারে অনেকটাই।
সূত্র: আজ তাক বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।